ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তালেবান প্রতিনিধিকে রাজকীয় সংবর্ধনা দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কবি ও গীতিকার জাভেদ আখতার। আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির ভারত সফর এবং সরকারি আপ্যায়নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেছেন, “পৃথিবীর সবচেয়ে জঘন্য সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিকে কেন্দ্রীয় সরকার যে আদিখ্যেতা দেখিয়েছে, তাতে লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাচ্ছে।”
মুত্তাকি বর্তমানে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে নয়াদিল্লিতে রয়েছেন। সফরের অংশ হিসেবে তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর-এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে দুই দেশের পতাকা স্থাপন করা হয়নি।
সফর চলাকালীন মুত্তাকির আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নারী সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমতি না দেয়ার বিষয়টি সমালোচনার মুখে পড়ে। পরদিন নারী সাংবাদিকদের আলাদা করে আমন্ত্রণ দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে জাভেদ আখতার লিখেছেন, “যারা সবসময় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলে, তাদের এই দ্বিচারিতা দেখে মাথা হেঁট হয়ে যায়।” তিনি দারুল উলুম দেওবন্দকেও কটাক্ষ করেছেন, “তালেবান নেতাকে তারা মাথায় তুলে নেচেছে, অথচ নারীদের শিক্ষা ও অধিকার নিয়ে তাদের অবস্থান নির্লজ্জ।”
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলন নিয়ে জানিয়েছে, এটি আফগান দূতাবাসে অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কূটনৈতিক নিরাপত্তার আওতায়, সরকারের সরাসরি হাত নেই।
তবে সমালোচনা থামেনি। কংগ্রেস নেতারা রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র, পি চিদম্বরম এবং সম্পাদকদের সংগঠন এডিটর্স গিল্ড অব ইন্ডিয়া উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেন, “ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে কেউ লিঙ্গ বৈষম্য করবে, আর সরকার চুপ থাকবে—এটা অনভিপ্রেত।”
ভারত সফরের সময়ে মুত্তাকি ভারতে বসবাসরত আফগান শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদল-এর সাথেও সাক্ষাৎ করেন। আলোচনায় উঠে আসে ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তা, দখল হওয়া সম্পত্তি ফেরত দেওয়া এবং মাল্টিপল ভিসার দাবি। মুত্তাকি তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান, “নিজেদের ব্যবসা-বাণিজ্য আবার শুরু করুন, সরকার আপনাদের স্বাগত জানাবে।”