ইরানের লাগাতার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মুখে মাত্র ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যেই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা শেষ হয়ে যেতে পারে—এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন ও ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। টাইমস অব ইসরায়েল ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক যৌথ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই উদ্বেগজনক তথ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের চলমান আক্রমণের মাত্রা ও তীব্রতা এতটাই বেশি যে, ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা—বিশেষ করে আয়রন ডোম ও অন্যান্য ব্যালিস্টিক প্রতিরোধ প্রযুক্তি—মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে অস্ত্র ও ইন্টারসেপ্টর সংকটে পড়তে যাচ্ছে। এতে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে দ্রুত অস্ত্র সহায়তা কিংবা সরাসরি সামরিক জড়িত থাকার প্রয়োজন হতে পারে।
ইসরায়েল ইতোমধ্যে এমন কিছু ক্ষেপণাস্ত্রকে জনবসতিহীন এলাকায় পড়তে দিচ্ছে, যেগুলো মানবসৃষ্ট ক্ষতির আশঙ্কা কম। কারণ, প্রতিটি হামলার জবাবে ইন্টারসেপ্টর ব্যবহার করতে গেলে তাদের অস্ত্রভাণ্ডার দ্রুত শেষ হয়ে যাবে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ইসরায়েল এখন বাধ্য হচ্ছে বেছে বেছে ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে—যেটি প্রতিরক্ষা কৌশলে বড় একটি দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়। জনবহুল অঞ্চল বা কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর হামলার সময়েই শুধু প্রতিরোধ ব্যবস্থা চালু রাখা হচ্ছে।
এদিকে, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জানিয়েছে, তারা সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত এবং সক্ষম। তবে অস্ত্রভাণ্ডারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
মার্কিন প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, চার দিনের যুদ্ধেই ইসরায়েল তাদের ব্যালিস্টিক প্রতিরক্ষা অস্ত্রের বড় অংশ ব্যবহার করে ফেলেছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা মজুতও দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এতে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, ইরানের ওপর যদি সরাসরি মার্কিন হামলা চালানো হয়, তবে ইসরায়েলকে আরও বড় পাল্টা হামলার মুখে পড়তে হতে পারে—যা গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।
এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের সামনে এখন কঠিন সিদ্ধান্ত—তারা কীভাবে এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী করবে, নাকি একটি বড় কৌশলগত পরিবর্তনের পথে হাঁটবে।
সূত্র: ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, টাইমস অব ইসরায়েল, ওয়াশিংটন পোস্ট.