ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান ভয়াবহ সংঘাত বন্ধে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত রয়েছে রাশিয়া। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মঙ্গলবার আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছেন। পেসকভ বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মনে করেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে এই সংঘাত বন্ধে প্রয়োজনে রাশিয়া মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত।
তবে, পেসকভ একই সাথে উল্লেখ করেছেন যে, “বর্তমানে আমরা অন্তত ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের মধ্যস্থতা গ্রহণ বা শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে যাওয়ার আগ্রহ দেখছি না।” এটি মস্কোর জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, কারণ ইরান রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র হলেও, রাশিয়া বহু বছর ধরেই ইসরায়েলের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। মস্কো ইসরায়েলকে নিজেদের থেকে দূরে ঠেলে না দেওয়ার নীতি অনুসরণ করছে।
সাম্প্রতিক এই সংঘাত গত শুক্রবার শুরু হয় যখন ইসরায়েল আকস্মিকভাবে ইরানে হামলা চালায়। এই হামলায় দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচির বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানও ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালায়। গত চার দিন ধরে উভয় দেশেই একে অপরের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে চরম ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। ইসরায়েলের হামলার মুখে তেহরান ছাড়ছেন শহরটির অনেক বাসিন্দা, যা সেখানকার ভয়াবহ পরিস্থিতির ইঙ্গিত দেয়।
এদিকে, এই সংঘাতে উভয়পক্ষের ব্যাপক প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইরানের মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট (এইচআরএএনএ) জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ইরানে ৪৫০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এরমধ্যে বেসামরিক মানুষের সংখ্যা ২২৪ জন এবং সামরিক বাহিনীর সদস্য ১০৯ জন। অন্যদিকে, ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার রাত থেকে ইরানের হামলায় গুরুতর আহত ১৫৪ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এই হতাহতের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, যা সংঘাতের তীব্রতা তুলে ধরছে।
আন্তর্জাতিক মহলে এই সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগ বিরাজ করছে। বিভিন্ন দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা এই সংঘাত বন্ধে আহ্বান জানাচ্ছে এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দিচ্ছে। তবে, ইসরায়েলের মধ্যস্থতায় অনীহা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।