২০২৬ আইপিএল মৌসুমকে সামনে রেখে ক্রিকেট বিশ্বের দৃষ্টি এখন আবুধাবির দিকে। আগামী পরশু অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আইপিএলের মিনি নিলাম। বড় পরিসরের মেগা নিলামের বদলে সীমিত আকারের এই নিলামেই দলগুলো শেষ মুহূর্তের ঘাটতি পূরণ এবং স্কোয়াড ভারসাম্য আনার চেষ্টা করবে।
রিটেইন ও ট্রেড প্রক্রিয়া প্রায় শেষ হওয়ায় এখন নিলামে প্রতিটি দলের হাতে থাকা বাজেট, খালি খেলোয়াড়ের সংখ্যা এবং বিদেশি কোটা—এই তিনটি বিষয়ই নির্ধারণ করবে তাদের কৌশল। সেই হিসাবে এবারের নিলামে সবচেয়ে স্বচ্ছল অবস্থানে রয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।
কলকাতার হাতে রয়েছে বিশাল ৬৪ কোটি ৩০ লাখ রুপি। এই অর্থ দিয়ে তারা সর্বোচ্চ ১৩ জন খেলোয়াড় দলে নিতে পারবে, যার মধ্যে বিদেশি হতে পারেন সর্বোচ্চ ছয়জন। নিলামের টেবিলে এমন বড় বাজেট কলকাতাকে আক্রমণাত্মক কৌশল নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। বড় নামের খেলোয়াড়দের জন্য দর হাঁকাতে পিছপা হওয়ার সম্ভাবনা কম তাদের।
এর সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের। দলটির হাতে রয়েছে মাত্র ২ কোটি ৭৫ লাখ রুপি। এই সীমিত অর্থে তারা সর্বোচ্চ ছয়জন খেলোয়াড় নিতে পারবে, তবে বিদেশি খেলোয়াড় নেওয়ার সুযোগ রয়েছে মাত্র একজনের। ফলে নিলামে মুম্বাইয়ের প্রতিটি সিদ্ধান্তই হতে হবে অত্যন্ত হিসেবি ও কৌশলী।
চেন্নাই সুপার কিংস নিলামে নামছে তুলনামূলক স্বস্তিদায়ক অবস্থান থেকে। তাদের হাতে রয়েছে ৪৩ কোটি ৪০ লাখ রুপি। স্কোয়াডে নয়টি জায়গা খালি রয়েছে এবং বিদেশি খেলোয়াড় নেওয়ার সুযোগ আছে সর্বোচ্চ আটজন। ভারসাম্যপূর্ণ বাজেট ও পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা থাকায় চেন্নাই নিলামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদও ভালো অবস্থানে আছে। তাদের বাজেট ২৫ কোটি ৫০ লাখ রুপি। দলটি সর্বোচ্চ ১০ জন খেলোয়াড় নিতে পারবে, তবে বিদেশি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে মাত্র দুইজন। ফলে দেশীয় খেলোয়াড় বাছাইয়ে মনোযোগী হতে পারে হায়দরাবাদ।
মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস ও দিল্লি ক্যাপিটালস। লক্ষ্ণৌয়ের হাতে রয়েছে ২২ কোটি ৯৫ লাখ রুপি। স্কোয়াডে ছয়টি জায়গা খালি এবং বিদেশি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে সর্বোচ্চ আটজন। অন্যদিকে দিল্লি ক্যাপিটালসের বাজেট ২১ কোটি ৮০ লাখ রুপি। তারা আটজন খেলোয়াড় কিনতে পারবে, যার মধ্যে বিদেশি হতে পারেন সর্বোচ্চ পাঁচজন।
মাঝারি বাজেট নিয়ে নিলামে নামছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও রাজস্থান রয়্যালস। বেঙ্গালুরুর হাতে রয়েছে ১৬ কোটি ৪০ লাখ রুপি। তারা আটজন খেলোয়াড় দলে নিতে পারবে, বিদেশি নেওয়ার সুযোগ দুইজন। রাজস্থানের বাজেট ১৬ কোটি ৫ লাখ রুপি। তারা নয়জন খেলোয়াড় কিনতে পারলেও বিদেশি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে মাত্র একজন।
সবচেয়ে কম বাজেটের দলে রয়েছে পাঞ্জাব কিংস ও গুজরাট টাইটানস। পাঞ্জাবের হাতে আছে ১১ কোটি ৫০ লাখ রুপি। তারা আটজন খেলোয়াড় নিতে পারবে, বিদেশি নেওয়ার সুযোগ দুইজন। গুজরাট টাইটানসের হাতে রয়েছে ১২ কোটি ৯০ লাখ রুপি। তারা পাঁচজন খেলোয়াড় কিনতে পারবে এবং বিদেশি খেলোয়াড় নেওয়ার সুযোগ রয়েছে সর্বোচ্চ আটজন।
সব মিলিয়ে সীমিত পরিসরের এই মিনি নিলামেই অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যাবে কোন দল কতটা পরিকল্পিতভাবে আইপিএল ২০২৬-এর প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাজেটের পার্থক্য, স্কোয়াডের চাহিদা এবং বিদেশি কোটা—এই তিনের সমন্বয়েই নির্ধারিত হবে এবারের নিলামের গতি ও উত্তাপ।

