আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন যে ভূমিকম্পের আগাম সতর্কবার্তা দিতে পারে তা জানেন কি? Google এর Android সিস্টেম যেসব ফোনে রয়েছে সেসব ফোন ভূমিকম্পের কয়েক সেকেন্ড আগে ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা দিতে সক্ষম। Google গত কয়েক বছর ধরে এই বিষয়ে পরীক্ষা চালিয়ে আসছে। গত বছরের অগাস্টে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া হওয়া 5.2 মাত্রার এক ভূমিকম্পের আগে নোটিফিকেশন পেয়েছিলেন সেখানকার বাসিন্দারা। সে সময় অনেকে জানিয়েছিলেন যে ওই ভূমিকম্পের 30 সেকেন্ড আগেই তারা সেটির সতর্কবার্তা পেয়েছিলেন।
Google বহুবছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ ইউএসজিএস ও ক্যালিফোর্নিয়ার বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সাথে এমন একটি প্রযুক্তি তৈরির চেষ্টা করছে যেটি ভূমিকম্প হওয়ার আগেই ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা পাঠাতে সক্ষম হবে। Android phone একটি ছোট এক্সিলারো মিটার রয়েছে যেটি ভূমিকম্প শনাক্ত করতে পারে। আপনি চাইলেই আপনার ফোনকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা Android এর সিসমোমিটার নেটওয়ার্ক কে যুক্ত করতে পারেন।
এটি তখনই কাজ করবে যখন আপনার ফোন চার্জে লাগানো থাকবে এবং স্থিতিশীল অবস্থায় থাকবে। যখন ভূমিকম্পের শুরু হয় ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছে থাকা ফোনগুলো সেটি বুঝতে পারে এবং Google এর আর্থকোয়াক ডিটেকশন সেন্টারে সিগন্যাল পাঠায়। তখন আমরা ওই অঞ্চলের আশেপাশে থাকা ফোনগুলো থেকে পাওয়া সিগন্যালের তথ্য বিশ্লেষণ করে নির্ধারণ করতে পারি কোথায় কত মাত্রার ভূমিকম্প হচ্ছে।
তবে ওই কয়েক সেকেন্ডেই কাউকে টেবিল বা খাটের নিচে আশ্রয় নেয়ার সময় দেবে কিংবা ট্রেনের গতি কমানোর সুযোগ করে দেবে বলে বিশ্বাস Google এর বড় ধরনের ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে এই সিস্টেম অনেকের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হবে বলেও মনে করে তারা এই পুরো প্রক্রিয়া টা সম্পন্ন হয় কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই যেহেতু রেডিও সিগন্যাল সিজমিক কম্পনের চেয়ে দ্রুত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যায় ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে দূরে থাকা অঞ্চলগুলোতে কম্পন অনুভূত হওয়ার আগেই এই সতর্কবার্তা পাঠানো সম্ভব হতে পারে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের Android ফোনে এটি চালু করতে সেটিংস অপশনে গিয়ে সেফটি এন্ড ইমার্জেন্সি অপশন সিলেক্ট করতে হবে।
তারপর সেখান থেকে আর্থকোয়াক অ্যালাট অপশন সিলেক্ট করলে চালু হয়ে যাবে এই সেবাটি।
তবে এই সিস্টেমের শতভাগ সুবিধা পেতে কিছু শর্ত মানতে হবে। ফোনের লোকেশন অন রাখতে হবে যেন Google শনাক্ত করতে পারে যে আপনার ফোন কোন অঞ্চলে রয়েছে। আর ফোনকে সিজমোগ্রাফ হিসেবে ব্যবহার করতে ডিভাইসটিকে স্থিতিশীল অবস্থানে বা টেবিলের উপরে রাখতে হবে এবং সেটিকে চার্জারের সাথে সংযুক্ত রাখতে হবে। অর্থাৎ আপনার ফোন যদি স্থিতিশীল অবস্থায় চার্জারের সাথে লাগানো থাকে তাহলে এটি ভূকম্পন শনাক্ত করে Google এর কাছে সম্ভাব্য ভূমিকম্পের তথ্য পাঠাতে পারবে। একই অঞ্চলের বেশ কিছু ফোন থেকে এই তথ্য পেলে Google সেগুলো বিশ্লেষণ করে বুঝতে সক্ষম হবে যে সেখানে ভূমিকম্প হতে চলেছে। আর সেই তথ্যের ভিত্তিতে তখন ওই এলাকা ও তার আশেপাশের এলাকার সব Android ব্যবহারকারীকে আগাম সতর্কবার্তা পাঠাবে তারা। পরিসংখ্যান বলছে পৃথিবীতে 1,800 কোটির বেশি মোবাইল ফোন রয়েছে যার মধ্যে 3.5 থেকে 400 কোটি Android ডিভাইস আছে। আর Google এর এই ভূমিকম্প শনাক্তকরণ পদ্ধতি আর্থকোয়েক এলার্ট সিস্টেম 90 টির বেশি দেশে কার্যকর।

