স্বর্ণের দাম দিন দিন বেড়ে চলেছে। এক ভরি স্বর্ণের দাম এখন দুই লাখ টাকাও ছাড়িয়ে গেছে। তবে বিদেশ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বর্ণের গয়না আনলে আপনাকে কোনো শুল্ক-কর দিতে হয় না।
ফলে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য দেশ থেকে দেশে ফেরার সময় আপনি শুল্কমুক্ত সুবিধায় স্বর্ণের গয়না আনতে পারবেন। একই সঙ্গে, নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বর্ণ শুল্ক দিয়ে দেশে আনার সুযোগও রয়েছে।
অপর্যটক যাত্রীদের ব্যাগেজ রুলসের আওতায় চলতি অর্থবছর থেকে স্বর্ণের অলংকার ও স্বর্ণের বার ও মুঠোফোন আনার সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। বাজেটের সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এই বিধিমালা জারি করেছে।
কতটুকু স্বর্ণের গয়না শুল্কমুক্ত
নতুন ব্যাগেজ বিধিমালা (অপর্যটক যাত্রী ব্যাগেজ বিধিমালা, ২০২৫) অনুযায়ী, বিদেশফেরত একজন যাত্রী বছরে একবার সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম স্বর্ণের অলংকার শুল্কমুক্ত আনতে পারবেন। এর মানে, প্রায় আট ভরি ১০ আনার স্বর্ণের গয়না আনলেও কোনো শুল্ক দিতে হবে না।
অন্যদিকে রুপার অলংকার আনতে পারবেন ২০০ গ্রাম পর্যন্ত। তবে সোনা বা রুপা যেটাই হোক না কেন, একই ধরনের গয়না ১২ পিসের বেশি আনা যাবে না।
এছাড়া নতুন বিধিমালার আওতায় তোলাপ্রতি ৫ হাজার টাকা শুল্ক দিয়ে একজন যাত্রী বছরে একবার সর্বোচ্চ ১০ তোলা ওজনের একটি সোনার বার আনতে পারবেন।
কীভাবে আনবেন
যাত্রীরা বাংলাদেশের বিমানবন্দরে নামার পর একটি ফরম পূরণ করতে হবে। ফরমটির নাম ব্যাগেজ ঘোষণা ফরম। সেখানে নিজের নাম, পাসপোর্ট নম্বর, ফ্লাইট নম্বর, জাতীয়তা, কোন দেশ থেকে এসেছেন—এসব তথ্য দিতে হবে। এছাড়া শুল্ক দিতে হবে এমন কোনো পণ্য থাকলে তার বিবরণীও দিতে হবে।
তবে ১০০ গ্রাম স্বর্ণের অলংকার ও ২০০ গ্রাম রুপার অলংকারের কম থাকলে ফরম পূরণ করতে হবে না। এর বেশি থাকলে বাড়তি অংশের জন্য শুল্ক বসবে।
ব্যাগেজ রুলসের আওতায় শুল্কমুক্ত পণ্য থাকলে গ্রিন চ্যানেল দিয়ে সরাসরি বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকবে।
দেশে স্বর্ণের বর্তমান দাম
দেশে এখন ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
সরাসরি আমদানি না হওয়া বা কমোডিটি এক্সচেঞ্জে বেচাকেনা না হলেও বৈশ্বিক বাজারে দাম বাড়লে বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়ে। বৈধ পথে আমদানি না হওয়ায় ব্যাগেজ রুলসে আসা স্বর্ণ জোগানের বড় উৎস হয়ে উঠেছে। ফলে বিশ্ববাজারের তুলনায় দাম ভরিপ্রতি কয়েক হাজার টাকা বেশি হয়। করোনার পর ডলারের বিপরীতে টাকার দুর্বলতার কারণেও স্বর্ণের দাম তুলনামূলক বেশি হারে বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৯০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। অন্যদিকে ব্যাংক অব আমেরিকা গ্লোবাল রিসার্চ জানিয়েছে, আগামী বছর প্রতি আউন্স সোনার দাম ৫ হাজার ডলারে পৌঁছাতে পারে।