লেখক: Dr. Shahinul Islam
নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞ
এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য), এমডি (শিশু)
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, সালথা, ফরিদপুর।
ফেসবুক পেজ: Dr. Shahinul Islam
—
শিশুদের অতিরিক্ত ওজন: এক নীরব বিপদ
বর্তমানে মোবাইল-নির্ভর জীবনধারা ও ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে শিশুদের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশেও শহর ও গ্রাম উভয় এলাকায় এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, যা শিশুর স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
—
অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির প্রধান কারণগুলো:
1. অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার গ্রহণ
নিয়মিত ফাস্টফুড, চিপস, চকলেট, কোমল পানীয় ও তেল-মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া
অতিরিক্ত মিষ্টি, আইসক্রিম ও কেক-পেস্ট্রির প্রতি আসক্তি
2. শরীরচর্চার অভাব
শিশুদের খেলাধুলা ও দৌড়ঝাঁপের সুযোগ না থাকা
সারাদিন মোবাইল, ট্যাব বা টিভি দেখা
3. ভুল অভিভাবকত্ব
শিশুকে খুশি রাখতে বারবার খাবার খাওয়ানো
শিশুর ক্ষুধা না থাকলেও জোর করে খাওয়ানো
“মোটা মানেই সুস্থ” — এই ভুল ধারণা
4. পর্যাপ্ত ঘুমের ঘাটতি ও মানসিক চাপ
রাত জেগে মোবাইল দেখা
ঘুম কম হওয়ায় হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্ন ঘটে, যা ওজন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে
—
অতিরিক্ত ওজন শিশুদের যেসব ক্ষতি করতে পারে:
1. শারীরিক সমস্যা:
হৃৎপিণ্ডের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস
হাঁটু ও কোমরের জয়েন্টে চাপ পড়ে ব্যথা হয়
শ্বাসকষ্ট বা ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হওয়া (Sleep Apnea)
2. মানসিক সমস্যা:
আত্মবিশ্বাসের অভাব
বন্ধুদের দ্বারা উপহাস বা বুলিং-এর শিকার হওয়া
বিষণ্ণতা বা একাকীত্ব
3. ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকি:
প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় স্থূলতা ও হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়
শিক্ষা ও সামাজিক জীবনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়
—
করণীয়: কীভাবে প্রতিরোধ করবেন শিশুর অতিরিক্ত ওজন?
সুষম ও পরিমিত আহার নিশ্চিত করুন
দৈনিক কমপক্ষে ১ ঘণ্টা খেলাধুলার ব্যবস্থা করুন
টিভি/মোবাইল স্ক্রিন টাইম ১ ঘণ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখুন
পর্যাপ্ত ঘুম ও স্বাস্থ্যকর রুটিন মেনে চলতে সাহায্য করুন
প্রতিমাসে শিশুর ওজন ও উচ্চতা পরিমাপ করে মনিটর করুন
প্রয়োজনে শিশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
—
বিশেষজ্ঞ মতামত ও পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করুন:
Dr. Shahinul Islam
নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞ