জেন-জিদের আন্দোলনের পর নেপালে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কির নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। তবে দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে সরকারকে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা ও ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে বর্তমানে তিন সদস্যের একটি মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে, কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রী কে হবেন তা এখনও নির্ধারিত হয়নি।
সূত্র জানায়, সরকার সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদের জন্য যোগাযোগ করছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেয়া হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন সরকারকে দ্রুত ২০২৬ সালের ৫ মার্চের নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং সাম্প্রতিক বিক্ষোভে ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত শত শত অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ করতে হবে। পাশাপাশি দেশের ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং বৈশ্বিক সহায়তা জোগাড় করা নতুন সরকারের জন্য অগ্রাধিকারের বিষয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা বলেন, নেপালের সরকারকে নির্বাচনের জন্য ভারত ও চীনের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জাপান ও কোরিয়ার সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে। নতুন সরকারের স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা শঙ্কর দাস বৈরাগী জানান, “বিদেশ নীতি পরিচালনা করা দ্বিমুখী। আমাদের বুঝতে হবে অন্যরা আমাদের কীভাবে দেখে। যদি বহিরাগত পরিস্থিতি ও উদীয়মান ভূ-রাজনৈতিক প্রবণতা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা না হয়, তবে দেশের পররাষ্ট্র নীতি ঝুঁকিতে পড়ে।”
ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর নেপাল অ্যান্ড সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক মৃগেন্দ্র বাহাদুর কার্কি বলেন, “নতুন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি সকলের কাছ থেকে অভিনন্দন বার্তা পেয়েছেন, তবে জনগণ মধ্যস্থতায় সন্দেহ করছে। এটি দূর করতে নতুন সরকারের জন্য অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা এবং বৈদেশিক সহায়তা অপরিহার্য।”
ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক সিডি ভট্ট বলেন, “নেপাল পুনর্গঠনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতীতের ভুলগুলো, যেমন সাবেক প্রধানমন্ত্রী অলির চীনের সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী।”
বিশ্লেষকরা মনে করেন, যেহেতু নতুন সরকার রাস্তার বিক্ষোভ থেকে এসেছে, তাই অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেশী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সুসংহত রাখা এ সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ।