জেরুজালেম, ফেব্রুয়ারি ২০২৫: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে উত্থাপিত নতুন পরিকল্পনাকে “সাহসী ও কৌশলগত” বলে প্রশংসা করেছেন। এই মন্তব্য তিনি মার্কিন সিনেটর মার্কো রুবিও-এর সঙ্গে এক বৈঠকের পর দেন, যেখানে ইসরায়েল-গাজা পরিস্থিতি এবং মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

গাজার জন্য ট্রাম্পের পরিকল্পনা কী?
ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি গাজাকে ঘিরে একটি বিকল্প প্রশাসনিক ব্যবস্থা গঠনের পক্ষে মত দিয়েছেন। তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী—
- হামাস মুক্ত একটি নতুন প্রশাসন গঠন করা হবে।
- গাজার নিরাপত্তা ব্যবস্থার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলের হাতে থাকবে।
- আন্তর্জাতিক সমর্থন নিয়ে গাজায় পুনর্গঠন প্রকল্প চালু করা হবে।
- মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ, বিশেষত সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে এই পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
নেতানিয়াহুর প্রতিক্রিয়া
বৈঠকের পর নেতানিয়াহু বলেন,
“প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সবসময় মধ্যপ্রাচ্যের জটিল পরিস্থিতি ভালোভাবে বোঝেন এবং তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি সাহসী ও কৌশলগত। গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে এই পরিকল্পনাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“গাজাকে একটি সন্ত্রাসমুক্ত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা দরকার এবং ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি এ বিষয়ে সহায়ক হতে পারে।”
মার্কো রুবিওর মন্তব্য
সিনেটর মার্কো রুবিও, যিনি মার্কিন কংগ্রেসে ইসরায়েলপন্থী নীতির একজন গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক, তিনি বলেন,
“আমরা একটি নিরাপদ মধ্যপ্রাচ্য গড়তে চাই, যেখানে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি জনগণ উভয়েই শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে। তবে এর জন্য হামাসের মতো উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর বিনাশ জরুরি।”
ফিলিস্তিনের প্রতিক্রিয়া
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও হামাস ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ফিলিস্তিনি নেতারা বলেছেন,
“এটি গাজাকে আরও বেশি দখলদারিত্বের দিকে ঠেলে দেবে এবং ফিলিস্তিনিদের সার্বভৌমত্বের অধিকার নষ্ট করবে।”
হামাসের এক মুখপাত্র বলেছেন,
“গাজা কোনোদিনই ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে যাবে না। ফিলিস্তিনিরা তাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে।”
বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা মূলত ইসরায়েলের স্বার্থের পক্ষে তৈরি করা হয়েছে, যা ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক ডেভিড মিলার বলেন,
“গাজার জন্য এই পরিকল্পনা কার্যকর হবে কি না, তা নির্ভর করবে আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতিক্রিয়ার ওপর।”
উপসংহার
ট্রাম্পের পরিকল্পনা নতুন কূটনৈতিক সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে পারে, তবে ফিলিস্তিনের জনগণের সমর্থন ছাড়া এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। ইসরায়েল-গাজার ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
🔥 আপনার মতামত কী? ট্রাম্পের পরিকল্পনা কি গাজায় স্থায়ী শান্তি আনতে পারবে নাকি এটি আরও সংঘাত সৃষ্টি করবে? কমেন্টে জানান! ⬇️