নিজস্ব প্রতিবেদক:
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে পুনরায় আপিলের ওপর পঞ্চম দিনের শুনানি শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।
আদালতে ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করছেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী। জামায়াতে ইসলামী’র পক্ষে শুনানি করছেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে ২১ অক্টোবর নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিলের শুনানি শুরু হয়। ২২ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। ওই দুদিন রিটকারী বদিউল আলম মজুমদারের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পরে ২১ অক্টোবর থেকে এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ শুনানি শুরু হয়।
শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ; বরং নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর ও টেকসই সমাধান চায় আদালত। যাতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এটি সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে।”
প্রধান বিচারপতি জানতে চান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল হলে তা কখন থেকে কার্যকর হবে। জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “গত দেড় দশকে জনগণ শাসিতের পরিবর্তে শোষিত হয়েছে। গুম, খুন, নিপীড়ন—এসবের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। জনগণের এই গণঅভ্যুত্থানই নির্ধারণ করেছে কে বিচারপতি হবেন, কে সরকার প্রধান হবেন—এই জনগণের ক্ষমতাকে অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই।”
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু হয়। তবে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হলে ২০১১ সালের ১০ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে এটি বাতিল ঘোষণা করে। পরবর্তীতে জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের মাধ্যমে এ ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল হয়।
এরপর আওয়ামী লীগের অধীনে তিনটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর এই ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে নতুন করে আবেদন করা হয়।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন—মোট চারটি পৃথক রিভিউ আবেদন দাখিল করেন।
এসব আবেদনের ওপর পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি চলছে, যা বুধবার পঞ্চম দিনে গড়াল।







