জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার যদি পক্ষপাতিত্ব করে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না চায়, তাতেও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা কঠিন হবে। এজন্য নির্বাচনে পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরি।
শুক্রবার সকালে ধানমন্ডিতে নির্বাচন কমিশন বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন আরএফইডি ও টিআইবির আয়োজনে অনুষ্ঠিত ইলেকশন ট্রেনিং কর্মসূচির উদ্বোধনীতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ অনেকেই প্রশাসনে থাকার প্রসঙ্গ তুলে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “দুর্বলতা মাথায় রেখেই এগোতে হবে। আমাদের অবকাঠামো—গভর্নেন্সের সুশাসন, জবাবদিহিতা, সরকার ব্যবস্থা, প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা, সততা, সত্যাচার, ট্রান্সপারেন্সি ও অ্যাকাউন্টেবিলিটি—এসবকে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে দাঁড় করানো হয়েছে। এটি শুধু গত ১৬ বছরের নয়, প্রায় ৫৪ বছর ধরে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণের মাধ্যমে দ্বিগুণ দলীয় প্রভাবের মধ্যে আনা হয়েছে, পেশাগত বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।”
তিনি বলেন, “অল্প সময়ের মধ্যে, এক-দেড় বছরে পুরো বিষয়টি নতুন করে গুছিয়ে ফেলা খুব সহজ নয়। সেই কারণেই অনেকের প্রশ্ন, এই প্রশাসন দিয়ে কি সত্যিকারের সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায়? প্রশ্নের যুক্তি আছে, কারণ পতিত সরকারের এজেন্ট বা সহযোগীরা প্রশাসন ও আইন সংস্থায় নেই—এটি বলা যাবে না।”
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, “অন্যদিকে যাদের দীর্ঘদিন বঞ্চিত করা হয়েছে, তাদের অবস্থান ফিরে পাওয়ার মধ্যেও দলীয়করণ প্রতিস্থাপিত হয়েছে। তবে প্রশাসনে এমন কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন যারা নিরপেক্ষ থাকতে ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে চেষ্টা করছেন। তিন ধরনের শক্তির টানাপড়েনের মধ্যেই প্রশাসন এগোচ্ছে এবং তারা নিজেদের ভূমিকা পালন করবে। রাতারাতি পরিবর্তন বা পুরো প্রশাসন নতুন করে সাজানো সম্ভব নয়। সময় দিতে হবে, যাতে স্থিতিশীলতা তৈরি হয় এবং নতুন ধরনের পেশাদারিত্ব গড়ে ওঠে।”