তরুণ-তরুণী, নারী ও শিশুদের জীবনঘাতী তামাকের প্রভাব থেকে রক্ষা করতে প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাসের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও অংশগ্রহণকারীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে নারী মৈত্রীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত “তরুণ-তরুণী, নারী ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার গুরুত্ব” শীর্ষক সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়।
প্রধান অতিথি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “শিশু ও তরুণরা আগামী দিনের নেতৃত্ব দেবে, আর নারীরা তাদের গড়ে তোলার কারিগর। তাদের সুস্থ রাখার অন্যতম উপায় হলো তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেওয়া। তাই প্রস্তাবিত আইন সংশোধনী এখনই পাস করা জরুরি।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রতিদিন তামাকজনিত কারণে ৪৪২ জন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, যা এক ধরনের মহামারীর মতো।
সেমিনারে জানানো হয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ বিদ্যমান আইনকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে বেশ কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাব হলো—
- পাবলিক প্লেসে স্মোকিং জোন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা,
- তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন বন্ধ করা,
- ই-সিগারেট প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া,
- খুচরা সিগারেট বিক্রি বন্ধ করা,
- তামাক কোম্পানির সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা,
- এবং মোড়কে সচিত্র সতর্কবার্তা ৯০ শতাংশে উন্নীত করা।
বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক অভিযোগ করে বলেন, “সরকার তামাক কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করে আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করছে। টোব্যাকো পলিটিক্স বন্ধ করতে হবে।”
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত রোগে মারা যায়। সরকার ইতোমধ্যে ই-সিগারেট আমদানি ও উৎপাদন নিষিদ্ধ করেছে। প্রস্তাবিত আইন অনুমোদিত হলে মৃত্যুর এই মিছিল অনেকটাই কমবে।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শবনম মোস্তারী এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান।

