মুহাম্মদ মহসিন আলী,
গ্রামের মসজিদের একজন ইমাম। ২৩ বছর ধরে সম্মানজনক এই পেশায় আছেন। ভোরবেলা মক্তবে ও কোরআনমজিদের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। উনার বাবা ও এই মসজিদের ইমাম ছিলেন। ওনার খুব ইচ্ছে হজ্ব পালন করার। নিজের হাতে পবিত্র কাবাঘর স্পর্শ করে, মসজিদুল নববী’তে থাকা রাসুল (সাঃ) এর রওজামুবার’র পাশে গিয়ে দরুদপাঠ করার। নামাজের পর, তিনি মহান আল্লাহতালার নিকট হজ্ব পালন সহজ করার জন্য দোয়া করতেন। আল্লাহ ইমাম সাহেব এর দোয়া হয়তো কবুল করেছেন।
প্রবাসে থাকা গ্রামের ছেলেরা নিজেদের অর্থায়নে সম্প্রতি ইমাম সাহেবকে উমরাহ্ পালনের ব্যবস্থা করলেন। বিরল এই ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের হাটখোলা গ্রামের বায়তুল মামুর জামে মসজিদের।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাতে বায়তুল মামুর জামে মসজিদে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মসজিদের মুসল্লী ও গ্রামের যুবকদের উপস্থিতিতে মাওলানা আকরাম হোসাইন কে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে, ওমরাহ হজের টিকেট, সৌদি রিয়াল, ফুলের তোরা ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করে উমরাহ্ পালনের জন্য বিদায় দেয়া হয়েছে।
এসময় মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাসেম ভূইয়ার সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক কেফায়েতুল ভূইয়ার সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, কাঞ্চনপুর হোসাইনিয়া আরাবিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা রফিকুল ইসলাম, মিরাশানী হাফেজিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আহমদ হোসাইন, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাহার ভূইয়া ও এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বায়তুল মামুর জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আকরাম হোসাইন বলেন, ‘ আমার অনেক আশা ছিলো পবিত্র ওমরাহ হজ করার। কিন্তু অর্থের অভাবে যেতে পারি না। যেই টাকা বেতন পায় তা সংসারের খরচে চলে যায়। এই গ্রামের প্রবাসীরা আমাকে ওমরা হজে পাঠানোর ব্যবস্থ করেছেন। গ্রামের প্রবাসীদের অধিকাংশই আমার ছাত্র। আমি ২৩ বছর ধরে এই মসজিদে ইমামতি করছি। দোয়া করি ওমরাহ হজ্ব শেষ করে ফিরে এসে আবার যেন ইমামতি করতে পারি। প্রবাসে থাকা যুবকদের ও গ্রামবাসী সহ মুসল্লীদের এই ভালবাসায় আমি কৃতজ্ঞ।

