সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরায় পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মতিনুর রহমান কচি দাপট দেখিয়ে টেন্ডার ছাড়াই সরকারি কলেজের ১৮ বিঘা কৃষি জমি নামমাত্র দামে ইজারা নিয়েছে।কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক বদরুল মিল্লাতের যোগসাজশে টেন্ডার ছাড়াই রাতের আঁধারে মাত্র ৭০ হাজার টাকায় এক সনের জন্য তাকে ইজারা দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।নামমাত্র দামে ইজারা দেওয়ায় এতে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারিয়েছেন।রাতের আঁধারে কিভাবে ইজারা দেওয়া হয়েছে সেটি জানে না কলেজের টেন্ডার ও ক্রয় কমিটি।এর আগে গত ৫ জানুয়ারি একই ভাবে কলেজের লেক,পুকুর,বিশাল আম বাগান নাম মাত্র ইজারা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ১৮ বিঘা জমি নামমাত্র মূল্যে ইজারা দেওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এলকাবাসি জানান,টেন্ডার ছাড়াই একই ব্যাক্তির কাছে ইজারা দেওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।এলাকাবাসির দাবি কলেজের একজন শিক্ষক বর্তমান অধ্যক্ষকে ভুল বুঝিয়ে এসব করেছে। তিনি এর আগেও একই ভাবে কলেজের সব কিছু নিয়ন্ত্রন করতেন।এলাকাবাসি দাবি পুনরায় যাতে দরপত্র আহবান করা হয় সেজন্য সরকারের উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসি জানান,একটি চক্র দীর্ঘদিন কলেজের লেক,পুকুর,কৃষি জমি,আম বাগান ভোগ দখল করতো কোন রকম টেন্ডার ছাড়াই।কলেজের সব কিছু একক নিয়ন্ত্রন করতেন কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক বদরুল মিল্লাত। আবারও তিনি কলেজের অধ্যক্ষকে ভুল বুঝিয়ে সব কিছু নাম মাত্র মূল্যে ইজারা দিয়েছেন তার পছন্দের লোকদের।কলেজের টেন্ডার ও ক্রয় কমিটি থাকলেও তারা পুতুলের মত ভুমিকা পালন করেছেন।
এলাকাবাসি আরও জানান,এর আগে গত ৫ জানুয়ারি কলেজের টেন্ডার হয় সেখানে কলেজের লেক ও পুকুর মাত্র ৭০ হাজার টাকায় স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মতিনুর রহমান কচিকে ইজারা দেওয়া হয়।কলেজের আম বাগান ইজারা দেওয়া হয়েছে মাত্র ৯৫ হাজার টাকায়।উন্মুক্ত দরপত্র আহবান করা হলে সব কিছু তিন গুন দামে ক্রয় হতো বলে এলাকাবাসি জানান।আর কোন রকম টেন্ডার ছাড়াই ১৮ বিঘা কৃষি জমি মাত্র ৭০ হাজার টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে আব্দুর রাজ্জাক নামে এক ব্যাক্তির কাছে।শুধু তাই নয় রাতের অন্ধকারে কলেজ শিক্ষক বদরুল মিল্লাত হোস্টেল সংলগ্ন পুকুরের মাছ বিএনপি নেতা কচির কাছে মাত্র ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে।
রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে লেক ও পুকুর ইজারা নেওয়া পৌর ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিনুর রহমান কচি বলেন,আমি কলেজের লেক খাল ও ছোট পুকুরটি লিজ নিয়েছি।হোস্টেলের পুকুর লিজ নেয়নি। সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক বদরুল মিল্লাতের কাছ থেকে শুধুমাত্র মাছ গুলো ৫০ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছি।আমি হোষ্টেলের পুকুর টেন্ডার নেয়নি।তাহলে কিভাবে শিক্ষক বদরুল মিল্লাত মাছ বিক্রি করলেন তার সদুত্তর দিতে পারেননি।
বাংলা বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক বদরুল মিল্লাত সাথে পুকুরের মাছ বিক্রির বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি পুকুরের মাছ বিক্রি করার কে। কলেজের অধ্যক্ষ ও ক্রয় ও টেন্ডার কমিটি আছে।আমি কোন মাছ বিক্রি করিনি।আমাকে জড়িয়ে একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে তিনি জানান।তিনি সরকারি কলেজের সব কিছু নিয়ন্ত্রন করেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন তা সম্ভব না।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ক্রয় ও টেন্ডার কমিটির আহবায়ক ও ব্যাবস্থাপন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোন্তাজাবুর রহমান বলেন, কলেজে শুধুমাত্র খাল ও ছোট পুকুর ও আম গাছগুলে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে।১৮ বিঘা কৃষি জমি টেন্ডার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এখনও হয়নি। ইজারা দেওয়া হয়ে গেছে তিনি জানেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন সেটা কলেজের অধ্যক্ষ বলতে পারবেন আমি জানি না।সব কিছু এত কম দামে ইজারা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয়ের কাছে শুনতে বলেম।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল হাসেম জানান, কলেজের খাল ও ছোট পুকুরও আম বাগান, কৃষি জমি লিজ দেওয়া হয়ে গেছে।সব কিছু এত কম মুল্যে ইজারা দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,আগেতো মোটেও ইজারা হত না। আমি আসার পর সব কিছু ইজারা দেওয়ায় সরকার কিছু রাজস্ব পাচ্ছে। ১৮ বিঘা জমি মাত্র ৭০ হাজার টাকায় ইজারা দিয়েছেন কিন্তু কলেজের টেন্ডার ও ক্রয় কমিটি জানেনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,টেন্ডারের বৈধ কাগজপত্র আছে।কলেজে এসে দেখে যাও আহবান জানান।কলেজের একজন শিক্ষক সব কিছু নিয়ন্ত্রন করে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন সেটা সম্ভব না বলে মন্তব্য করেন।
এস এম হাবিবুল হাসান
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি