জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। সে সময় তার সঙ্গে ছিলেন শেখ রেহানা। এই দুই বোনের পরিবারের সদস্যরা বিদেশে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের কী কী সম্পদ আছে, তা খোঁজ করছে। সংস্থাটি তথ্য চেয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসনকে চিঠিও দিয়েছে।
তাদের সম্পদের খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়,শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের অধীনে গাজীপুরে রয়েছে ৪টি বাগানবাড়ি, যেগুলোর মধ্যে কিছু পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এ বাগানবাড়িগুলোর একটিতে গত ৫ আগস্ট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। বর্তমানে স্থানীয় প্রশাসন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।
টিউলিপ’স টেরিটরিসহ গাজীপুরে চারটি বাগানবাড়ির খোঁজ পাওয়া গেছে, যেগুলোর মালিক শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা। বাগানবাড়িগুলোর আশপাশের বাসিন্দারা বলছেন, শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য, স্বজন ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রায়ই বাগানবাড়িগুলোতে বেড়াতে যেতেন। বিশেষ করে শীত মৌসুমে তাঁদের যাতায়াত বেশি ছিল। মাঝেমধ্যে রাতে জাতীয় পতাকা লাগানো গাড়ি প্রবেশ করত। তখন বাংলোর চারপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি ।শেখ রেহানার স্বামী শফিক আহমেদ সিদ্দিকের মালিকানাধীন এই বাগানবাড়ি ছাড়াও গাজীপুরে আরও তিনটি বাগানবাড়ির খোঁজ পাওয়া গেছে। সেগুলোর মধ্যে একটি ‘তেলিরচালা’ এলাকায়, আরেকটি ‘ফাওকাল’ এলাকায় এবং একটি ‘বাঙ্গালগাছ’ এলাকায়। স্থানীয় ভূমি কার্যালয়ের নথি অনুযায়ী, এই বাড়িগুলোর জমির পরিমাণ প্রায় ২৫ বিঘা, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, জমির পরিমাণ আরও বেশি।
বাগানবাড়ি গুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো ‘তেলিরচালা’ বাগানবাড়ি। এটি শিল্পাঞ্চলীয় এলাকাতে অবস্থিত এবং এখানে একটি ডুপ্লেক্স ভবন, সুইমিংপুল, পুকুর ও খোলা জায়গা রয়েছে। ৫ আগস্ট এখানে ও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল এবং বাড়িটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে।
এছাড়া ‘ফাওকাল’ বাগানবাড়ি, যেখানে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি এবং বিশাল পুকুর রয়েছে, তাতেও ভাঙচুরের চিহ্ন রয়েছে। বাগানবাড়িটির মালিকের নাম তারিক আহমেদ সিদ্দিক, যিনি শেখ রেহানার দেবর।
আরেকটি বাগানবাড়ি ‘বাঙ্গালগাছ’ এলাকার ‘বাগানবিলাস’। এটি কিছুটা ভিন্ন, এখানে শত শত গাছ লাগানো এবং একটি পুকুর রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, এখানে অনেক বছর ধরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। তবে ৫ আগস্ট এখানে ভাঙচুরের পর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
এই চারটি বাগানবাড়ি এবং সম্পত্তি সম্পর্কে দুর্নীতি দমন কমিশন বিস্তারিত তদন্ত করছে এবং কিছু মামলার ক্ষেত্রেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। (তথ্যসূত্রে: প্রথম আলো)