লালমোহাম্মদ কিবরিয়া :
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে লোকালয়ে চালকলে পরিবেশ দূষনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসী ও কৃষক পরিবারের সদস্যদের।
গ্রামবাসীরা জানায়, ২০১৮ সালে উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের দেবোত্তরপাড়া গ্রামের স্থানীয় জামাল উদ্দিন নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি জামাল এন্ড জাহিদ অটো চালকল স্থাপন করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। এলাকার কৃষকদের অভিযোগ শুরু থেকেই এ চালকলের কালো ধোঁয়া, কুড়া, ছাই,ধূলাবালু দূষিত পানি ও বর্জে আশপাশের এলাকার ঘরবাড়ি গাছপালা আবাদি জমির ফসলের ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, চালকলের নির্গত দুষিত পানি, ছাই ধুলা উড়ে এসে ঘরবাড়ির অবস্থা বিশ্রী হয়ে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পরার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মকভাবে হুমকির সম্মুখীন।
চালকল এলাকার আশপাশের ঘরবাড়িতে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে গ্রামবাসিদের । এছাড়া চালকলের পাশে দুষিত পানি ও বর্জ রাখার জন্য একটি পুকুর ব্যবহার করা হতো। পুকুরটি ভরাট হয়ে দূষিত পানি কৃষকদের ফসলি জমিতে প্রবেশ করে। এতে কৃষকদের অন্তত ৫০ একর ফসলি জমি আবাদ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এসব জমিগুলো চাষাবাদ করতে পারছেন না কৃষকরা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন কৃষকরা। চালকল স্থাপনের পর থেকেই স্থানীয় কৃষকরা এসব বিষয় নিয়ে অভিযোগ করে আসছিল। কিন্তু অভিযোগ করতে গিয়ে চালকল মালিকের দ্বারায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর থেকে এলাকার কৃষকরা ক্ষতি সাধনের পড়ে ও প্রভাবশালী চালকল মালিকের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। ক্ষতি সাধিত হওয়ার পরেও নিরবেই সহ্য করে আসছেন স্থানীয় কৃষকরা।
অভিযোগ রয়েছে, জামাল উদ্দিন লোকালয়ে চালকল স্থাপন করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসলেও পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করে আসছেন । এদিকে চালকলটি স্থাপনের পর থেকেই স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি, রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মি,মানবাধিকার কর্মী, মিডিয়া কর্মিদের দ্বারেদ্বারে ঘুরেও কোন কাজ হয়নি বলে জানান কৃষকরা। অভিযোগ রয়েছে চালকল মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। এছাড়া অবহেলিত কৃষকদের পক্ষে ও কেউ কথা বলতেও চান না। এ সুবাদে চালকল মালিক জামাল উদ্দিন কৃষকও গ্রামবাসীদের ক্ষতি সাধন করে অবাধে তার ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। ফলে এলাকার কৃষকরা রয়েছেন চরম বিপাকে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে কৃষকদের সাথে কথা বলে ও প্রত্যক্ষ করে এসব তথ্য জানা গেছে। এ বিষয়ে চালকল মালিক জাহিদুল ইসলাম বলেন কৃষকদের অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। দূষিত পানি সংরক্ষনের জন্য পুকুর খনন করা হয়েছে। কালকলের কুড়া ও ছাই জনবস্তিতে যাওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেলের সাথে কথা হলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।
শেরপুরের পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো,নুর কুতুবে আলম সিদ্দিকের সাথে কথা হলে বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান। তবে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান।
লাল মোঃ শাহজাহান কিবরিয়া
শেরপুর
তাং- ১৮/০২/২৫ ইং