ভারতের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই একটি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান। ‘আব্দালি উইপন সিস্টেম’ নামের এই ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বোচ্চ পাল্লা ৪৫০ কিলোমিটার। ইসলামাবাদ জানিয়েছে, এটি ‘সিন্ধু মহড়া’ নামের একটি সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, এই উৎক্ষেপণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সেনাদের অপারেশনাল প্রস্তুতি যাচাই এবং ক্ষেপণাস্ত্রটির উন্নত নেভিগেশন সিস্টেম ও ম্যানুভারেবিলিটি পরীক্ষা করা। সফল উৎক্ষেপণের পর প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং দেশটির সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা সেনাবাহিনীর সক্ষমতা ও প্রস্তুতির ওপর পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছেন।
তবে পাকিস্তানের এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকে ‘গুরুতর উসকানি’ হিসেবে দেখছে ভারত। দেশটির সরকারি সূত্রের দাবি, পাকিস্তান নিয়মিতভাবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি পাকিস্তানি নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যকেও তারা উস্কানিমূলক বলে উল্লেখ করেছে।
ভারতীয় অভিযোগের পেছনে সাম্প্রতিক একটি সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। ২২ এপ্রিল, জম্মু ও কাশ্মীরের বৈসারণ উপত্যকার পর্যটন এলাকায় এক ভয়াবহ হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন এক নেপালি পর্যটক ও স্থানীয় এক ঘোড়সওয়ার। ভারত সরকার দাবি করেছে, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ রয়েছে—যদিও কোনো দৃঢ় প্রমাণ এখনও উপস্থাপন করা হয়নি। অন্যদিকে, পাকিস্তান এই অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে।
এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের পাশাপাশি সামরিক প্রস্তুতিও চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন একটি সময় যখন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অত্যন্ত সংবেদনশীল, তখন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল ও অনিশ্চিত করে তুলছে।