ইরানের অবস্থান পরিষ্কার—ইসরাইলি হামলা অব্যাহত থাকাকালীন কোনো যুদ্ধবিরতির আলোচনায় যাবে না তারা। মধ্যপ্রাচ্যের দুই গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী দেশ, কাতার ও ওমানকে এই বার্তাই দিয়েছে তেহরান। বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন রয়টার্সের এক সূত্র, যিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।
চতুর্থ দিনের মতো ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। ক্রমাগত বাড়ছে সংঘাতের তীব্রতা, যা বড় ধরনের যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করছে।
রয়টার্সকে ওই কর্মকর্তা জানান, ইরান কাতার ও ওমানকে জানিয়ে দিয়েছে—ইসরাইলের আগ্রাসনের জবাব সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো আলোচনায় বসবে না তারা। হামলার মুখে থেকে আলোচনার সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছে তেহরান।
গত শুক্রবার ইসরাইলের একটি আকস্মিক হামলায় ইরানের সামরিক কমান্ডের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হন। হামলায় ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইসরাইল জানিয়েছে, তারা এই অভিযান আরও জোরদার করবে।
এর জবাবে ইরান শনিবার ভোরে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করে ইসরাইলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে। এই পাল্টাপাল্টি হামলা এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধের আশঙ্কা ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠছে।
তেহরান থেকে যেসব তথ্য বের হয়ে এসেছে, সেগুলোর ভিত্তিতে বলা হচ্ছে—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি বা পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরুর বিষয়ে কাতার ও ওমানের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছে ইরান—এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে তেহরান।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইরানের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “আমরা কাতার ও ওমানকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি, আমরা এখন কোনো আলোচনা করতে রাজি নই। আমাদের প্রতিক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো কূটনৈতিক প্রস্তাব আমরা গ্রহণ করবো না।”
তবে এই বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কাতার বা ওমানের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য আসেনি।
এই অচলাবস্থা ও প্রতিশোধমূলক হামলা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আরও বড় সংঘাতের দিকে পরিস্থিতিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।