ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনাকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তার মতে, এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি বাংলাদেশে সরাসরি কোনো বড় অর্থনৈতিক বিপদ না আনলেও, এটি ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিবেশে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে, যা উদ্বেগজনক।
শনিবার ঢাকায় চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) মিলনায়তনে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজিত একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা সীমান্তের গণ্ডি পেরিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতার পরিসরেও নেতিবাচক ছাপ ফেলতে পারে। ইতিমধ্যে নিষ্ক্রিয় সার্ক প্ল্যাটফর্মের কার্যকারিতা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চলছে, সেখানে এমন সংঘাতময় পরিস্থিতি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি জানান, ভারত বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। প্রতিবেশী দেশটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি তুলনামূলকভাবে কম হলেও, ভারতীয় বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধার ফলে সম্প্রতি রপ্তানি বেড়েছে। গত ৪০ বছরে যেখানে এক বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল রপ্তানি, পরবর্তী ৭ বছরে সেটি দ্বিগুণ হয়েছে। তবে ভারতের যদি সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি পায়, তাহলে সেটি তাদের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করবে, যার ছায়া বাংলাদেশেও পড়বে।
তিনি বিনিয়োগ সংক্রান্ত মন্তব্যে বলেন, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা প্রতিশ্রুতির বাইরেও বাস্তব পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিবেচনা করেন। কোনো কারণে দেশের নির্বাচন যদি বিলম্বিত হয়, তবে তা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বড় অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে।
‘সাম্প্রতিক বিনিয়োগ সম্মেলন বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে’—এই বিষয়ের ওপর অনুষ্ঠিত ছায়া সংসদ বিতর্কে ইডেন কলেজের দল বিরোধী পক্ষ হয়ে বিজয়ী হয়। সরকারি দলের ভূমিকায় ছিল ঢাকা কলেজের বিতার্কিকরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।