রাশিয়ার অভ্যন্তরে ভয়াবহ ড্রোন হামলা চালিয়ে অন্তত ৪০টি যুদ্ধবিমান ধ্বংস করার দাবি করেছে ইউক্রেন। এই অপারেশনে ব্যবহৃত হয়েছে ১১৭টি ড্রোন, যার লক্ষ্য ছিল রাশিয়ার পাঁচটি কৌশলগত বিমানঘাঁটি। ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ জানিয়েছে, প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের রুশ সামরিক সম্পদ ধ্বংস হয়েছে এই হামলায়। সাইবেরিয়া থেকে শুরু করে মস্কো ও উত্তর মেরু সংলগ্ন অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকা বিমানঘাঁটিগুলোতে একযোগে এই বিস্ময়কর হামলা চালানো হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বিমানের মধ্যে রয়েছে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম টিইউ-৯৫ ও টিইউ-২২ বোমারু বিমান, যেগুলো ইউক্রেনের শহরগুলোতে হামলার জন্য ব্যবহার করা হতো।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই অভিযানে সফল আঘাতের হার ৩৪ শতাংশ বলেও জানান। তিনি বলেন, এটি ছিল একেবারেই অনন্য একটি সামরিক অভিযান, যার প্রস্তুতি চলেছে প্রায় দেড় বছর ধরে। রাশিয়ার তিনটি টাইমজোনে ছড়িয়ে কাজ করেছেন ইউক্রেনের অপারেটররা। হামলার জন্য ব্যবহৃত ড্রোনগুলো আগেই রাশিয়ায় ঢুকিয়ে ছোট কাঠের ঘরের ছাদে লুকিয়ে রাখা হয় এবং পরে রিমোট কন্ট্রোলে উড়ানো হয় লক্ষ্যবস্তুর দিকে।
ঘটনার পরপরই রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হামলার বিষয়টি স্বীকার করে জানায়, কয়েকটি বিমান আগুনে পুড়ে গেছে, তবে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। হামলার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আগুনে পুড়ছে একাধিক সামরিক বিমান। এই হামলাকে ইউক্রেনের সর্বাপেক্ষা ভয়াবহ ও সফল ড্রোন আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ঘটনার একদিন আগেই রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক ও কুরস্ক অঞ্চলে দুটি ট্রেনলাইনে বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে অন্তত সাতজন নিহত হয়। এই হামলার দায় কেউ স্বীকার না করলেও রুশ কর্তৃপক্ষ একে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখছে।
এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই ইউক্রেন আগামী সোমবার ইস্তানবুলে শান্তি আলোচনা করতে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নেবে। আলোচনার মূল লক্ষ্য থাকবে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি এবং যুদ্ধবন্দী ও অপহৃত শিশুদের মুক্তি নিশ্চিত করা।