ভারতের ওয়াক্ফ সংশোধনী আইন ঘিরে পশ্চিমবঙ্গে যখন উত্তেজনা ছড়িয়েছে, বিশেষ করে মুর্শিদাবাদের কিছু এলাকায় সহিংসতার ঘটনা সামনে এসেছে—ঠিক সেই প্রেক্ষাপটে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে দৃঢ় অবস্থানে সামনে এলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত ইমাম-মুয়াজ্জিন সম্মেলনে বিভিন্ন ধর্মের প্রতিনিধিদের সামনে মমতা বলেন, “আমাদের বন্ধন দীর্ঘদিনের, কেউ তা ভাঙতে পারবে না। বাংলায় হিন্দু-মুসলমান যুগ যুগ ধরে মিলেমিশে বাস করেছে, এ সম্প্রীতি কেউ নষ্ট করতে পারবে না।”
তিনি সরাসরি বিজেপিকে দোষারোপ করে বলেন, “ওরা মেরুকরণ করে বাংলার ক্ষমতা দখল করতে চায়। কিন্তু বাংলার মানুষ তাদের সেই সুযোগ দেবে না।”
ওয়াক্ফ আইন সংশোধন প্রসঙ্গে মমতা জানান, এই আইনের বিরুদ্ধে সংবিধানিক পথেই লড়বে তার সরকার। তিনি বলেন, “বিজেপির জনবিরোধী আইন আমরা ভবিষ্যতে পরিবর্তন করব। এখন ধৈর্য ধরতে হবে, সময় বদলাবে। দিল্লিতে আবার নতুন সরকার গঠিত হবে, এবং তখন জনবিরোধী আইনগুলো বাতিল করা হবে।”
মুর্শিদাবাদে সহিংসতার প্রসঙ্গে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “আমি খবর পেয়েছি, বাইরের লোক এনে টাকা দিয়ে কিশোরদের দিয়ে গণ্ডগোল করানো হয়েছে। সীমান্ত দিয়ে কারা ঢুকেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে।”
তিনি বলেন, “যদি প্রতিবাদ করতেই হয়, সেটা হোক শান্তিপূর্ণভাবে। প্রয়োজনে খোলা রাস্তায় নয়, নির্ধারিত স্থানে প্রতিবাদ করুন, এমনকি চাইলে দিল্লিতে গিয়েও আওয়াজ তুলুন।”
প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে মমতা বলেন, “আইন বাতিলের দাবি তুলুন কেন্দ্রের সামনে। বাংলায় আমরা কারও প্ররোচনায় রক্তপাত হতে দেব না।”
এছাড়া তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে এজেন্সি ব্যবহার করে রাজনীতি করার অভিযোগও তোলেন। বলেন, “এখন দেশের সব এজেন্সিই কার্যত অমিত শাহের অধীনে। তিনি রাজ্যে অশান্তি তৈরিতে এজেন্সিকে ব্যবহার করছেন।”
শেষে মমতা জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমাদের উপর ভরসা রাখুন। বাংলার মাটি শান্তির মাটি, একে অশান্ত করতে দেব না। সম্প্রীতির এই বন্ধন যুগ যুগ ধরে চলবে।”