ইরানে মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে দেশটির বিচার বিভাগ। ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে চলমান চরম উত্তেজনার মধ্যে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। তেহরান টাইমসের বরাতে জানা যায়, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং ইরানের সর্বোচ্চ আদালতও তার রায় বহাল রাখে। যদিও ওই ব্যক্তির পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে, তবু কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তিনি ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন।
এই ঘটনার পাশাপাশি আরও চারজন সন্দেহভাজন মোসাদ এজেন্টকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। পুলিশ মুখপাত্র সাঈদ মনতাজের আল-মাহদী জানান, রাজধানী তেহরানের রে কাউন্টির ফাশাফুয়েহ জেলায় রবিবার দুই ব্যক্তি গ্রেপ্তার হন। তাদের কাছ থেকে ২০০ কেজির বেশি বিস্ফোরক, ২৩টি ড্রোনের যন্ত্রাংশ, লঞ্চারসহ গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী এবং একটি নিসান পিকআপ ট্রাক জব্দ করা হয়। একই দিনে আলবোর্জ প্রদেশের সাভোজবোলাঘ কাউন্টিতেও আরও দুজন সন্দেহভাজন মোসাদ সংযোগযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়। কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই চক্রটি ইরানের অভ্যন্তরে বিস্ফোরকবাহী ড্রোন ব্যবহার করে ধ্বংসাত্মক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, যা ইসরাইলের বৃহৎ অন্তর্ঘাতমূলক ষড়যন্ত্রের অংশ।
ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের অভ্যন্তরে একাধিক স্থানে, এমনকি আবাসিক ভবনেও বিমান হামলা চালায়। এর পর থেকেই মোসাদ সক্রিয়ভাবে ইরানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টায় লিপ্ত। তেহরান এই হামলাকে সরাসরি ‘উসকানিমূলক আগ্রাসন’ বলে উল্লেখ করেছে এবং তার জবাবে ইরানও পাল্টা সামরিক পদক্ষেপ নেয়। ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে তারা তেল আবিব, জেরুজালেম ও হাইফাসহ ইসরাইলের একাধিক শহরে পাল্টা আঘাত হানে, যার ফলে ইসরায়েলের জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব পড়ে এবং বহু মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যেতে বাধ্য হতে হয়।
ইরানি সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দেশের ভেতরে মোসাদ-সম্পর্কিত নেটওয়ার্ক যতদিন সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস না হবে, ততদিন এই অভিযান চলবে। সর্বশেষ গ্রেপ্তারগুলো তাদের গোয়েন্দা সংস্থার সক্ষমতা ও সতর্কতারই বড় উদাহরণ বলে মনে করছে তেহরান।