ইসরায়েল রামাল্লায় আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক বাতিল করে দিয়েছে, যা ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার মুখে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। শনিবার হিব্রু সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েলি সরকার রোববার রামাল্লায় অনুষ্ঠেয় এই বৈঠকের অনুমতি দেবে না এবং আরব নেতাদের সফর ঠেকিয়ে দেবে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জর্ডান, মিশর, সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধিদল এই বৈঠকে অংশ নিতে চেয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েলের অনুমতি ছাড়া জর্ডান থেকে পশ্চিম তীরে প্রবেশ সম্ভব নয়, যা পুরো সফরটিকেই অনিশ্চিত করে তোলে।
ইসরায়েলি পত্রিকা ইয়েদিওথ আহরোনোথ এক শীর্ষ ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাতে জানায়, “ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রচারে রামাল্লায় আরব মন্ত্রীদের বৈঠক ইসরায়েলের জন্য অগ্রহণযোগ্য। আমরা কোনোভাবেই এমন পদক্ষেপে অংশ নেব না, যা আমাদের নিরাপত্তার ক্ষতি করতে পারে।”
এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আরব বিশ্বের ঐক্য প্রকাশ এবং আসন্ন আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া। রিয়াদে অনুষ্ঠিত আরব-ইসলামিক সম্মেলনের গঠিত মন্ত্রী পর্যায়ের কমিটির অংশ হিসেবে এই দলটি নিউইয়র্কে সৌদি-ফ্রান্সের যৌথ আয়োজনে জুনে অনুষ্ঠিতব্য এক শান্তি সম্মেলনে অংশ নেবার প্রস্তুতিও নিচ্ছিল।
এরই মাঝে, ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীদের হামলায় অন্তত ৯৭২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতও স্পষ্টভাবে জানিয়েছে—ইসরায়েলের দখলদারিত্ব অবৈধ এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের সমস্ত বসতি খালি করা উচিত। অথচ বাস্তবতায় দখলদারিত্ব আরও জোরদার করতে ইসরায়েল কূটনৈতিক উদ্যোগগুলোও রুদ্ধ করছে, যা শুধু শান্তি প্রচেষ্টাকে নয়, গোটা আন্তর্জাতিক ন্যায়ের ধারণাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিচ্ছে।