বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবেরদের একজন এবং টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান ইলন মাস্ক নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ তিনি জানান, ‘আমেরিকা পার্টি’ নামের এই দলটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত দুইদলীয় রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের বাইরে জনগণের বিকল্প চাওয়ার প্রেক্ষিতে এই দল গঠন করা হয়েছে বলে জানান মাস্ক। যদিও এখনো দলটি আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইলেকশন কমিশনের (FEC) কাছে নিবন্ধিত হয়নি।
গত মে মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর থেকে দুইজনের মধ্যে সম্পর্ক অবনতি ঘটেছে। এক সময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত মাস্ক প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়া থেকে শুরু করে তার প্রশাসনের ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’তে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। নির্বাচনী সহায়তা হিসেবে ট্রাম্পের প্রচারণায় মাস্ক ব্যয় করেন প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু ট্রাম্পের করনীতি ও বাজেট ব্যয়ের কৌশলের সমালোচনা করেই তিনি পদত্যাগ করেন।
সম্প্রতি একটি ‘বৃহৎ বিল’ নিয়ে দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়। মাস্ক অভিযোগ করেন, বিলটিতে বিপুল ব্যয় ও কর ছাড় থাকলেও পরিবেশবান্ধব প্রকল্প ও বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য কোনো প্রণোদনা রাখা হয়নি, যা টেসলার মতো কোম্পানির জন্য স্পষ্ট অবহেলা। ট্রাম্প পাল্টা জবাবে বলেন, মাস্ক ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি পাওয়া ব্যক্তি এবং এসব সুবিধা ছাড়া তাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হতো।
এরই মাঝে মাস্ক তার প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ এক জরিপ চালান, যেখানে অধিকাংশ উত্তরদাতা নতুন একটি রাজনৈতিক দল চেয়েছেন। মাস্ক বলেন, জনগণের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে ‘আমেরিকা পার্টি’র জন্ম হয়েছে। যদিও তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার সাংবিধানিক যোগ্যতা রাখেন না, তবে নতুন দলের নেতৃত্বে কে থাকবেন, তা এখনও জানাননি।
যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় কোনো রাজনৈতিক দল টিকে থাকা বা মূলধারার রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করা অত্যন্ত কঠিন। অতীতে লিবার্টেরিয়ান, গ্রীন পার্টি কিংবা পিপলস পার্টির মতো দলগুলো চেষ্টার পরও বড় দুই দলের ছায়া থেকে বের হতে পারেনি। তবে ইলন মাস্কের প্রভাব, জনপ্রিয়তা এবং বিপুল অর্থবল ‘আমেরিকা পার্টি’কে ভিন্ন বাস্তবতা এনে দিতে পারে— এমনটাই এখন রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।