মালয়েশিয়ার শতবর্ষী রাজনীতিক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ক্লান্তিজনিত সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। রোববার (১৩ জুলাই) মাহাথিরের ব্যক্তিগত অফিস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বর্তমানে তিনি বিশ্রামে রয়েছেন এবং চিকিৎসকদের প্রত্যাশা, দ্রুতই সুস্থ হয়ে সন্ধ্যার মধ্যেই তিনি বাড়ি ফিরতে পারবেন।
১০০তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে মাহাথির একটি পিকনিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি নিজেই গাড়ি চালিয়ে সেখানে যান। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আগে মাহাথির প্রায় এক ঘণ্টা সাইকেল চালান, যা তার শারীরিক সক্ষমতা ও মানসিক দৃঢ়তার একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ। তবে অনুষ্ঠান শেষে ক্লান্ত অনুভব করায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়ার নেতৃত্ব দেওয়া মাহাথির দীর্ঘদিন ধরেই হৃদরোগে ভুগছেন এবং অতীতে বাইপাস সার্জারিও করিয়েছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতা নিয়ে তাকে একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। তবে বয়স শত পেরিয়ে যাওয়ার পরও তিনি যে এতোটা সক্রিয়—এটি মালয়েশিয়ার জনগণ ও বিশ্ব রাজনীতির জন্য এক বিস্ময়কর বিষয়।
১৯৮১ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত টানা ২২ বছর তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এরপর রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ালেও ২০১৮ সালে এক বিস্ময়কর প্রত্যাবর্তনে বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দিয়ে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। যদিও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে মাত্র দুই বছরেই তার সরকার ভেঙে পড়ে।
মাহাথিরের হাসপাতাল ভর্তির খবরে দেশজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে তার অফিস থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, এটি কোনো গুরুতর সমস্যা নয়, কেবল মাত্র ক্লান্তি ও বিশ্রামের প্রয়োজনীয়তা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার দ্রুত সুস্থতা কামনায় বহু মানুষ বার্তা দিয়েছেন। মাহাথির মোহাম্মদ শুধু মালয়েশিয়ার নয়, পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাসে এক কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ হিসেবে বিবেচিত।