ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি সোমবার তেহরানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তিনি গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইসলামি দেশগুলোর মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানান। এক্স প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক বার্তায় খামেনি বলেন, “যখন দুনিয়ার উসকানিদাতা শক্তিগুলো যুদ্ধ ও সংঘর্ষ সৃষ্টি করতে ব্যস্ত, তখন মুসলিম উম্মাহর নিরাপত্তা রক্ষার একমাত্র পথ হলো ইসলামি দেশগুলোর ঐক্য ও পারস্পরিক সহযোগিতা।” তিনি বলেন, ফিলিস্তিন ইস্যুতে পাকিস্তানের অটল অবস্থান অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অনেক মুসলিম দেশ যখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নরম নীতি গ্রহণ করছে, তখন পাকিস্তান এককথায় সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ন্যায়ের পক্ষে অটল থেকেছে।
আয়াতুল্লাহ খামেনি পাকিস্তানের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ককে ‘ভ্রাতৃপ্রতিম ও উষ্ণ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি স্মরণ করেন, ১৯৮০-এর দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধে পাকিস্তান কিভাবে ইরানের পাশে ছিল এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভিত্তি কতটা মজবুত। অন্যদিকে, শাহবাজ শরিফ খামেনির সঙ্গে বৈঠককে ‘গর্বের বিষয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে যে সংকট ও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, সেখানে ইরান যেভাবে দায়িত্বশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, তা আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি।” তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “সংকটকালে ইরান সবসময় পাকিস্তানের পাশে থেকেছে, উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, এটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও অনুপ্রেরণাদায়ক।”
শাহবাজ শরিফ এই সফরে তুরস্ক হয়ে দ্বিতীয় গন্তব্য হিসেবে ইরানে পৌঁছান। তেহরানের সাদাবাদ প্রাসাদে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। দেওয়া হয় গার্ড অব অনার।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সফর কেবল একটি কূটনৈতিক আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং ইসলামি ঐক্য ও আঞ্চলিক সহযোগিতাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার বার্তা বহন করছে। পাকিস্তান-ইরান সম্পর্ক কৌশলগত গভীরতা লাভ করছে, যা ভবিষ্যতের ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।