ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বর্তমানে ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলা এবং সম্ভাব্য হত্যাচেষ্টার হুমকি মোকাবিলায় যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, তা দেশটির ইতিহাসে নজিরবিহীন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক গোপন সূত্রভিত্তিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তিনি তার জীবন এবং ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নেতৃত্ব কাঠামো রক্ষা করতে ‘অসাধারণ একটি ধারাবাহিক ব্যবস্থা’ গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সম্ভাব্য মৃত্যুর পর কারা নেতৃত্বে আসবেন—সে জন্য তিনি মনোনীত করেছেন তিনজন সিনিয়র ধর্মীয় নেতাকে, যাদের নাম এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, খামেনি বর্তমানে একটি নিরাপদ বাঙ্কারে অবস্থান করছেন এবং ইলেকট্রনিক যোগাযোগ একপ্রকার বন্ধ করে দিয়েছেন। সরাসরি যোগাযোগের পরিবর্তে তিনি একজন বিশ্বস্ত সহকারীর মাধ্যমে সামরিক কমান্ডার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিচ্ছেন, যাতে তাকে ট্র্যাক বা শনাক্ত করা না যায়। এমনকি গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় কর্তৃক সকল গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মোবাইল ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হলো, অনেকের ধারণা থাকলেও তার পুত্র মোজতবা খামেনিকে উত্তরসূরি তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে। অর্থাৎ উত্তরসূরি নির্বাচনেও খামেনি ভেঙেছেন পুরনো ধারা।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ইসরায়েলি হামলায় ইরানে অন্তত ৪৩০ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ৩,৫০০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক। অন্যদিকে, ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন এবং আহতের সংখ্যা কয়েক শতাধিক।
এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর সেই উত্তপ্ত পরিস্থিতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন খোদ খামেনি নিজেই। তবে ইরান সরকার এখনো নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রকাশিত এই প্রতিবেদন সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।