মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ঘনঘটা আরও প্রকট হচ্ছে। এবার আর শুধু হুমকি নয়, সরাসরি হামলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চূড়ান্ত বার্তা দিয়েছে ইরান। তেহরানের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে— মাত্র ৮ ঘণ্টায় তেল আবিবকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে তাদের। ইরানের বিমান বাহিনীর প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদ বাহেদী সামরিক বাহিনীর এক বৈঠকে ঘোষণা দেন, মাশহাদের শহীদ হাবিবি বিমান ঘাঁটি থেকে ইরানের যুদ্ধবিমান আকাশপথে তেল আবিবে পৌঁছে ধ্বংসাত্মক হামলা চালাতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তিনি বলেন, “এটা কোনো হুমকি নয়, এটা প্রতিজ্ঞা। আমাদের আকাশসীমা এখন প্রতিরক্ষার চেয়ে বেশি, এটা প্রতিশোধের অস্ত্র।”
এমন বক্তব্য এসেছে ইসরাইলের পুরনো এক দাবি—“সাত ঘণ্টায় ইরানকে গুঁড়িয়ে দেওয়া সম্ভব”—এর জবাব হিসেবে। এবার পাল্টা হিসাব দিয়েছে ইরান। তাদের কথায়, “তোমরা বলেছ সাত ঘণ্টা, আমরা বলছি আট ঘণ্টা।” এই প্রতিশ্রুতি আরও বাস্তব হয়ে উঠেছে রাশিয়ার কাছ থেকে পাওয়া অত্যাধুনিক সুখই SU-35 যুদ্ধবিমান হাতে পাওয়ার পর। এই বিমানে পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন সম্ভব, যা ইরানকে দিয়েছে ভয়াবহ প্রতিশোধ সক্ষমতা। গুগল ম্যাপ অনুযায়ী, মাশহাদ থেকে তেল আবিবের দূরত্ব মাত্র ৮ ঘণ্টা ২৫ মিনিট, যা ইরানের হামলার পরিকল্পনাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলছে।
অন্যদিকে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যে সন্দেহ প্রকাশ করলেও, কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেননি। ফলে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। এরইমধ্যে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) ঘোষণা দিয়েছে নতুন প্রতিশোধ পরিকল্পনা “অপারেশন ট্রু প্রমিস থ্রি।” এই অভিযানে কেবল ইসরাইল নয়, মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোকেও টার্গেট করা হবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে তেহরান ও তেল আবিবের দিকে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত যে, একটিমাত্র ভুল সিদ্ধান্ত গোটা অঞ্চলকে ভয়াবহ যুদ্ধে ঠেলে দিতে পারে। আর ইরান এবার আর কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার আশায় বসে নেই—তাদের হাতে ট্রিগার, চোখে শত্রু, আর মনে প্রতিশোধের আগুন।