টানা কয়েকদিন ধরে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান হামলা-পাল্টা হামলায় অস্থির হয়ে উঠেছে পুরো মধ্যপ্রাচ্য। গত শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল তেহরানসহ ইরানের একাধিক সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানও পাল্টা হামলা চালিয়ে ইসরায়েলকে বেকায়দায় ফেলেছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যত চাপের মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংঘাতে ইসরায়েলের সুপরিচিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’ ব্যর্থতার মুখে পড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন একজন সামরিক বিশ্লেষক। তিনি বলেন, “আয়রন ডোম ভালোভাবে কাজ করলেও, টানা এবং সমন্বিত হামলার মুখে সেটিও চাপ অনুভব করছে।” তবে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ইসরায়েলের কাছে রয়েছে উন্নত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যেমন ‘অ্যারো ১’ এবং ‘অ্যারো ৩’, যা উচ্চমাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম। পাশাপাশি রয়েছে ‘ডেভিড স্লিং’, যা মাঝারি দূরত্বের হামলাও প্রতিহত করতে পারে।
বিশ্লেষক মুহাম্মদ সেলুম বলেন, “ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি অত্যন্ত উন্নত হলেও গত ৪৮ ঘণ্টার অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে যে, অতিমাত্রায় সমন্বিত আক্রমণের মুখে সেটিও ভেঙে পড়তে পারে।”
এই সংকটময় মুহূর্তে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে ফোনে আহ্বান জানিয়েছেন যেন তিনি উত্তেজনা না বাড়িয়ে সংযম দেখান এবং যত দ্রুত সম্ভব পারমাণবিক আলোচনায় ফিরে আসেন। কিন্তু ইরানি প্রেসিডেন্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইসরায়েল হামলা বন্ধ না করলে ইরান কোনো আলোচনায় বসবে না। এর আগে রবিবার নির্ধারিত যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনা বাতিলের ঘোষণাও দেয় তেহরান।
এই সংঘাত কেবল দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে পুরো অঞ্চলজুড়ে স্থিতিশীলতা বিপন্ন করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা। পরিস্থিতি যত দ্রুত শান্ত না হবে, ততই বিশ্ব নিরাপত্তার ওপর এর প্রভাব বাড়বে।