ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাত চরমে পৌঁছালে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করছে ইরান। দেশটির সংসদ সদস্য ইসমাইল কোসারি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইরানি সংবাদ সংস্থা আইআরআইএনএন-কে। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরাও। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক সিনা তুসি বলেন, ইসরায়েল যদি ইরানের তেল ও জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর আরও বড় ধরনের হামলা চালায়, তাহলে হরমুজ প্রণালী বন্ধ করা হতে পারে ইরানের শেষ প্রতিক্রিয়া। যদিও এখনো সে পর্যায়ে পৌঁছায়নি পরিস্থিতি, তবে উত্তেজনা যেভাবে বাড়ছে, তা পুরো পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলকে জ্বালানি সংকটে ফেলতে পারে।
সম্প্রতি ইসরায়েল ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের একটি গ্যাসক্ষেত্রে হামলা চালিয়েছে এবং এর জবাবে ইরানও হাইফায় ইসরায়েলের জ্বালানি স্থাপনায় পাল্টা আঘাত হেনেছে। সিনা তুসির মতে, যদি এই পাল্টাপাল্টি হামলার ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।
হরমুজ প্রণালী ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত একটি সংকীর্ণ ও কৌশলগত পানিপথ, যার মাধ্যমে উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলো বিশ্বের বাজারে অধিকাংশ তেল রপ্তানি করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য সংস্থা (ইআইএ)-এর তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রতিদিনের মোট তেল চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশই এই প্রণালীর মাধ্যমে সরবরাহ হয়। ফলে এটি বন্ধ হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্য হঠাৎ আকাশচুম্বী হয়ে উঠতে পারে, এবং এর প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক অর্থনীতির সর্বস্তরে। বিশ্লেষকরা বলছেন, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হওয়া মানেই হবে বিশ্বের অর্থনীতির জন্য এক বড় ধরনের ধাক্কা।