ইরান বলেছে, পারমাণবিক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ফিরতে হলে ওয়াশিংটনকে আগে ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নিন্দা জানাতে হবে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই রোববার এক বিবৃতিতে জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে আলোচনায় বসা “অর্থহীন”, কারণ ইসরাইলি হামলার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছে তেহরান। তিনি বলেন, ইরান দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত। তবে ইসরাইল তা প্রত্যাখ্যান করে আসছে। এখন পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, ইরানের পার্লামেন্ট যদি পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (NPT) থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে সেটি সরকার ‘অবশ্যই’ বাস্তবায়ন করবে বলে সতর্ক করেন বাঘাই।
এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। রোববার ইসরাইলের হাইফা ও তেল আবিব শহরে ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যাতে অন্তত ৮ জন নিহত হয় বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। এর আগে ইসরাইল ফের তেহরানে বিমান হামলা চালায়। ইরানের রাজধানীসহ একাধিক শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, সাম্প্রতিক হামলাগুলোতে এখন পর্যন্ত ২২০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭০ জন নারী ও শিশু রয়েছে।
সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে ইরানের সামরিক শীর্ষ নেতৃত্বে। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC)-এর গোয়েন্দা প্রধান এবং আরও দুই জেনারেল নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে সামরিক দপ্তরে চরম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরাইলের এই আগ্রাসনের “উপযুক্ত জবাব” খুব শিগগিরই দেওয়া হবে এবং প্রতিরক্ষা বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
অন্যদিকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে ‘সুনির্দিষ্ট ও কৌশলগত হামলা’ চালিয়েছে এবং এসব অভিযান চলমান থাকবে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় পুরো অঞ্চলটি এখন ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে।