নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি সামরিক হামলার উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটে আকস্মিকভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার (১০ মে) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাতব্যাপী আলোচনার পর আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণাঙ্গ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।” তিনি আরও লেখেন, “সাধারণ জ্ঞান ও দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের জন্য আমি উভয় দেশকে অভিনন্দন জানাই।”
দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা গত কয়েক দিনে বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল। পাকিস্তান ঘোষণা দেয়, তারা ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’ নামে একটি প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে অন্তত ২০টিরও বেশি ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। ইসলামাবাদের একাধিক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে জানান, এসব হামলা নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) পেরিয়ে এবং পাকিস্তানের সার্বভৌম ভূখণ্ডে ভারতের আগ্রাসনের জবাবে চালানো হয়েছে।
এর আগে ৫ ও ৬ মে রাতে পাকিস্তানের একাধিক শহরে ভারতের কথিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। তারই প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয় এই বড় পরিসরের সামরিক অভিযান। দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এমন সরাসরি সংঘাতে সারা বিশ্বের উদ্বেগ বাড়তে থাকে। সেই প্রেক্ষাপটেই ট্রাম্পের এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে একটি তাৎপর্যপূর্ণ কূটনৈতিক অর্জন হিসেবে দেখছেন অনেক বিশ্লেষক।
তবে এখনো পর্যন্ত ভারত বা পাকিস্তান— কোনো দেশই সরকারিভাবে এই যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। ফলে ট্রাম্পের ঘোষণার বাস্তবায়ন কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে এখনো সংশয় রয়েছে। তবুও অনেকের আশা, এই ঘোষণা হয়তো উপমহাদেশে নতুন করে শান্তি ফিরিয়ে আনার পথে প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে।