জাতিসংঘে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। তিনি মোদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সস্তা অনুকরণ হিসেবে আখ্যা দেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘে এক আলোচনায় অংশ নিয়ে ভুট্টো বলেন, ভারত এখন ইসরায়েল থেকে অনুপ্রেরণা নিচ্ছে এবং মোদি নিজেকে নেতানিয়াহুর মতো প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন, অথচ তিনি তার ধারে-কাছেও নেই। মোদিকে ‘তেমু ভার্সনের নেতানিয়াহু’ বলে উপহাস করে ভুট্টো জানান, এই অনুকরণ মোটেও ভারতীয় গণতন্ত্র বা সভ্যতার সঙ্গে মানানসই নয়। একই সঙ্গে তিনি ভারতের সরকারকে অনুরোধ জানান যেন নেতিবাচক উদাহরণ অনুসরণ না করে তারা নিজস্ব ইতিবাচক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখে।
বক্তব্যে বিলাওয়াল ভুট্টো পাকিস্তানের প্রাচীন ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে বলেন, পাকিস্তান সিন্ধু সভ্যতার উত্তরাধিকার বহন করছে এবং তারা নিজেদের ঐতিহাসিক গৌরবে গর্বিত। তিনি জানান, মোহেঞ্জোদারোর মতো ঐতিহাসিক স্থান তার নির্বাচনী এলাকার কাছেই অবস্থিত। একই ঐতিহ্য ভারতও বহন করছে, এবং এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য থেকেই উভয় দেশের শিক্ষাগ্রহণ করা উচিত।
এটাই প্রথম নয়, অতীতেও একাধিকবার মোদিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন বিলাওয়াল ভুট্টো। ২০২২ সালে জাতিসংঘের আরেক বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, তিনি আরএসএস, বিজেপি বা নরেন্দ্র মোদিকে ভয় পান না। তিনি তখন গুজরাটের ২০০২ সালের দাঙ্গার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, সেই ঘটনায় মোদির ভূমিকা ইতিহাসে চিরস্থায়ীভাবে লেখা থাকবে। তাঁর মতে, বিজেপি বা আরএসএস ইতিহাসকে যেভাবেই সাজাতে চাইুক, প্রকৃত সত্য চাপা দেওয়া সম্ভব নয়।
ভুট্টোর এমন বক্তব্যের জবাবে ভারতীয় রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপি দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে এবং তাঁর মন্তব্যকে ‘অসভ্য ও অরুচিকর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বিলাওয়াল ভুট্টোর বক্তব্যের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক হতাশা ফুটে উঠেছে। তারা বলেন, ভুট্টোর উচিত ছিল পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদে জড়িত গোষ্ঠীগুলোর দিকে আঙুল তোলা, যারা বহু বছর ধরে সন্ত্রাসকে রাষ্ট্রীয় কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে।