ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন কোনোভাবেই থেমে যাবে না—এমন হুশিয়ারি দিয়েছে হামাস। সংগঠনটি জানিয়েছে, ইসরাইলি দখলদারদের সম্পূর্ণ পরাজয়ের আগ পর্যন্ত তারা প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বরাতে জানা যায়, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কথিত “বিজয়ের আকাঙ্ক্ষা” মূলত গাজায় ব্যর্থতা ঢাকার প্রচেষ্টা মাত্র। রাফাহে অভিযানকে নেতানিয়াহুর এক মরিয়া প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করে হামাস বলেছে, “রাফাহ হবে প্রতিরোধের প্রতীক এবং দখলদারদের জন্য ভয় ও দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকবে।”
হামাসের এই প্রতিক্রিয়া আসে এমন এক সময়ে, যখন গাজায় দীর্ঘদিনের সংঘর্ষ এবং মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে নজিরবিহীন হামলা চালায়, যাতে প্রায় ১২০০ ইসরাইলি নিহত হন এবং আড়াই শতাধিককে জিম্মি করা হয়। এর পরপরই গাজায় ব্যাপক সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল। টানা দেড় বছরের এই আগ্রাসনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৩ হাজার ৩০০ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৬ হাজার ৪১৬ জন। নিহত ও আহতদের মধ্যে ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতির পথে যেতে হয়। তবে যুদ্ধবিরতির দুই মাস না পেরোতেই ১৮ মার্চ থেকে আবারও সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। দ্বিতীয় দফার এই হামলায় এখন পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং পাঁচ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।
হামাসের মতে, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরাইলি সরকার সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এবং নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে আবারো রক্তপাতের পথ বেছে নিয়েছে। তবে হামাস স্পষ্ট করেছে, এই আগ্রাসনের মুখেও তারা মাথানত করবে না, বরং প্রতিরোধ আরও জোরালো হবে। সংগঠনটির ভাষায়, “রাফাহ হবে প্রতিরোধের দুর্গ, আর দখলদারদের জন্য এক চিরস্থায়ী দুঃস্বপ্ন।”