ভারতসহ অন্যান্য দেশের আরোপ করা ‘অত্যন্ত অন্যায্য’ শুল্কের কঠোর সমালোচনা করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার কংগ্রেস ভাষণে ফের বিষয়টি আলোচনায় আনেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ সময় তিনি ভারতসহ অন্য দেশগুলোর ওপর প্রতিশোধমূলক শুল্ক কার্যকর করার ঘোষণা দেন। আগামী ২ এপ্রিল থেকে তার দেশ এই শুল্ক কার্যকর করবেন বলেও জানান ট্রাম্প।
কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ওই ভাষণে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জানান, বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর সেই হারেই তিনি শুল্ক আরোপ করতে চান, যে হারে সেই দেশগুলো মার্কিন রপ্তানির ওপর শুল্ক আরোপ করে থাকে। ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘অন্যান্য দেশ বহু দশক ধরে আমাদের বিরুদ্ধে শুল্ককে ব্যবহার করেছে এবং এখন আমাদের পালা তাদের বিরুদ্ধে সেটি ব্যবহার করার।’
কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনের ভাষণটি ছিল ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ভাষণ। ভাষণে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মোটামুটিভাবে বলতে গেলে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, ব্রাজিল, ভারত-মেক্সিকো ও কানাডা– এগুলোর নাম শুনেছেন? – এবং আরও অনেক দেশ আমাদের ওপর তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি শুল্ক আরোপ করে, যা অত্যন্ত অন্যায্য।’
ভারতের উদাহরণ দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘ভারত আমাদের গাড়ির ওপর ১০০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপ করে।’
ট্রাম্প তার দীর্ঘদিনের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই তার দৃষ্টিতে অযৌক্তিক বাণিজ্যনীতির মোকাবিলা করতে হবে। তিনি জানান, তার প্রশাসন ভারত ও চীনের মতো দেশের ওপর শিগগিরই প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করবে, যা তিনি গত মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওয়াশিংটন সফরের সময়ও বলেছিলেন। ট্রাম্প আরো বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, এই নতুন শুল্ক ব্যবস্থার আওতাভুক্ত থাকবে ভারত। ‘এ নিয়ে কেউ আমার সঙ্গে বিতর্ক করতে পারবে না’ বলেও ভাষণে যোগ করেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, অন্য দেশগুলো যে হারে শুল্ক আরোপ করে, ২ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্রও সেই একই হারে শুল্ক আরোপ করবে। যে হারে তারা আমাদের ওপর শুল্ক আরোপ করবে, আমরাও তাদের ওপর একই হারে শুল্ক আরোপ করব। তারা আমাদের ওপর যে হারে কর ধার্য করবে, আমরাও তাদের ওপর একই হারে কর ধার্য করব। যদি তারা আমাদের বাজারে প্রবেশ ঠেকাতে আর্থিক নয় এমন শুল্ক বাধা দেয়, তাহলে আমরাও তাদের বাজারে প্রবেশ ঠেকাতে একই ধরনের ব্যবস্থা নেব।
এমন একটি সময়ে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন, যখন তার প্রশাসন অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচারের মতো বিষয় উল্লেখ করে মেক্সিকো, কানাডা ও চীন থেকে আমদানির ওপর ব্যাপক হারে শুল্ক আরোপ করেছে। দেশটির এই সিদ্ধান্ত, আন্তর্জাতিক নেতাদেরও তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অভিযোগ করেন, ‘ট্রাম্প কানাডার অর্থনীতিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন, যেন যুক্তরাষ্ট্র সহজেই তা নিজেদের অধীনে নিতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ওয়াশিংটন ঘনিষ্ঠ মিত্রদের লক্ষ্যবস্তু করছে, অথচ ইউক্রেন সংকটে রাশিয়াকে ‘শান্ত রাখার’ নীতি অনুসরণ করছে।’