দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ দাবানলে বিপর্যস্ত অবস্থা। দেশটির কার্যকরী প্রেসিডেন্ট হান ডাক-সু জানিয়েছেন, প্রবল ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশটি, যেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ১৮ জন। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে এমন বিধ্বংসী দাবানল আগে দেখা যায়নি। হান ডাক-সু জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, এবং সরকার সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে।
সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, দাবানলের কারণে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, ছয়জন গুরুতর আহত এবং ১৩ জন সামান্য আহত হয়েছেন।
গত শুক্রবার সিওলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একাধিক দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘদিনের খরা ও প্রবল শুকনো বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত বিস্তার লাভ করে। হান জানিয়েছেন, দাবানল সারারাত ধরে ভয়ংকরভাবে জ্বলেছে, বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে, এবং রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
অগ্নি নিয়ন্ত্রণের জন্য কয়েক হাজার দমকলকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত হাহয়ে ফোক ভিলেজ হুমকির মুখে পড়েছে। হাজারো মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, এবং সরকার তাদের ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় দিয়েছে।

প্রবল বাতাসের কারণে ড্রোন ও হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হয়েছে।
বিপর্যস্ত এলাকার অনেক বাসিন্দা খুব কম সময়ের মধ্যে বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। ৭৯ বছর বয়সী কোন সো-হান বলেন, “পাহাড় থেকে আগুন যেন আমার বাড়ির দিকে ধেয়ে এলো। যারা এটি নিজের চোখে দেখেনি, তারা অনুভব করতে পারবে না। আমি শুধু প্রাণ নিয়ে বের হতে পেরেছি।”
সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয় ও সাহায্যের ব্যবস্থা করছে। আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা দাবানল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় দাবানল প্রায় প্রতি বছর দেখা যায়, তবে এবারের ঘটনা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই এই দুর্যোগ এত মারাত্মক হয়ে উঠেছে।
সূত্র:রয়টার্স