ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার অভিবাসন ও বিদেশি বিল-২০২৫ উত্থাপন করেছে, যা দেশটির নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করে। মঙ্গলবার লোকসভায় উত্থাপিত এই বিলটি জাতীয় নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টির জন্য কঠোর শাস্তির প্রস্তাব করেছে।
বিলের মূল দিকসমূহ
এই বিলে বলা হয়েছে, ভারতের অখণ্ডতার জন্য কোনো বিদেশিকে প্রবেশ বা থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না, যদি তারা কোনো নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করে। অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা ইমিগ্রেশন অফিসারদের দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এবং নার্সিং হোম-এর মতো প্রতিষ্ঠানে থাকা বিদেশি নাগরিকদের তথ্য অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
শাস্তির বিধান
বিলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করলে, পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৫ লাখ রুপি অর্থদণ্ড করা হবে। এছাড়া, জাল কাগজপত্র ব্যবহার করলে দুই থেকে সাত বছরের কারাদণ্ডের সঙ্গে এক থেকে দশ লাখ রুপি জরিমানা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ভারতীয় ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করলে বা অতিরিক্ত সময় ধরে ভারতে অবস্থান করলে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ৩ লাখ রুপি জরিমানা হতে পারে।
এক নজরে বিলের প্রস্তাবিত শাস্তি:
- অবৈধ প্রবেশ: ৫ বছর কারাদণ্ড + ৫ লাখ রুপি জরিমানা।
- জাল কাগজপত্র: ২-৭ বছর কারাদণ্ড + ১-১০ লাখ রুপি জরিমানা।
- ভিসা শর্ত লঙ্ঘন: ৩ বছর কারাদণ্ড + ৩ লাখ রুপি জরিমানা।
এই বিলের উদ্দেশ্য ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা সুরক্ষা এবং বিদেশিদের মাধ্যমে দেশের ভেতরে কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি না হওয়া নিশ্চিত করা। তবে, এটি আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হতে পারে, বিশেষত মানবাধিকার কর্মীদের কাছ থেকে, যারা বিলের কিছু বিধানকে অনুপাতহীন এবং অমানবিক হিসেবে বিবেচনা করেন।
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক এবং সামাজিক ইস্যু হয়ে দাঁড়াতে পারে, যা ভবিষ্যতে ভারতের অভিবাসন নীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলবে।