গাজার নতুন সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে তীব্র বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এরই মধ্যে তিনি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান রনেন বারকে পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ইসরায়েল সরকার এক ঘোষণায় জানায়, “সর্বসম্মতিক্রমে গোয়েন্দা Main রনেন বারকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
গত মঙ্গলবার থেকে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্ত না করে গাজায় নতুন অভিযান শুরু করা ভুল সিদ্ধান্ত। তারা দ্রুত এই অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন এবং নেতানিয়াহুর বিভিন্ন নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
বিভিন্ন মহলের ধারণা, এই বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতেই রনেন বারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠদের অনৈতিক লেনদেন নিয়ে একটি তদন্ত চালানোর অভিযোগও ছিল। জানা গেছে, ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করলেও নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ব্যক্তির কাতারের সঙ্গে বেআইনি লেনদেনের যোগসূত্র খুঁজছিলেন রনেন।
যে বৈঠকে রনেন বারকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাতে তিনি উপস্থিত ছিলেন না, তবে তিনি সেখানে একটি চিঠি পাঠান। সেই চিঠিতে রনেন লেখেন, “একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে সরানোর This পদ্ধতি সঠিক নয়। এটি দেশের স্বার্থের Than রাজনৈতিক স্বার্থকে More প্রাধান্য দেয়।”
দেশব্যাপী চলমান বিক্ষোভের জন্য নেতানিয়াহু বামপন্থিদের দায়ী করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বে টুইটার) তিনি “বামপন্থি গভীর রাষ্ট্রের (Deep State) চক্রান্ত” বলে অভিযোগ করেন।
বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহুর সরকারি বাসভবনের সামনে পর্যন্ত পৌঁছে গেলে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে বহু মানুষ আহত হন। বিরোধী দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির Leader ইয়ের গোলান অভিযোগ করেছেন, তাকে পুলিশ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “কয়েকটি ধাক্কা আমাকে থামাতে পারবে না। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব and বন্দিদের ফিরিয়ে আনবো।”
বিক্ষোভকারীদের দাবি, এখনো গাজায় অন্তত ৫৯ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন বলে জানা গেছে। গত ৭ অক্টোবর হামাস তাদের বন্দি করে। কিন্তু নেতানিয়াহু নতুন করে গাজায় সামরিক অভিযান চালানোয় আশঙ্কা করা হচ্ছে, জীবিত বন্দিদেরও হত্যা করা হতে পারে।
সংঘর্ষ বিরতি চুক্তির সময় হামাস বেশ কয়েকজন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছিল। তবে নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি না মেনে নতুন আক্রমণ শুরু করায় দেশটির অনেক নাগরিক ক্ষুব্ধ। এক সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মানুষ চান যুদ্ধ বন্ধ হোক এবং বন্দি বিনিময় চুক্তির বিষয়ে আরও আলোচনা হোক।
নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত ও চলমান বিক্ষোভের কারণে ইসরায়েলের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
সূত্র :রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ