আন্তর্জাতিক ডেস্ক – ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ জারি করেছে, যাতে দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করা না যায়।
বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা আনুষ্ঠানিকভাবে বারকে আগেভাগে বরখাস্তের অনুমোদন দেয়। এর কারণ হিসেবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পূর্বাভাস দিতে ব্যর্থতা উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থগিতাদেশ ও আইনি লড়াই
শুক্রবার, সুপ্রিম কোর্ট এক আদেশে বলেছে, বরখাস্তের বিষয়ে ৮ এপ্রিলের মধ্যে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।
রোনেন বার ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে পাঁচ বছরের জন্য শিন বেতের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান। নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে, এটি হবে ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিন বেত প্রধানের বরখাস্তের ঘটনা।
নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, বারের প্রতি তার “পেশাদার ও ব্যক্তিগত বিশ্বাসহীনতা” দীর্ঘ সময় ধরে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বার এই বরখাস্তকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন।
নেতানিয়াহুর দপ্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কাতারের সাথে আর্থিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে। অ্যাটর্নি জেনারেল গালি বাহারাভ-মিয়ারা এই তদন্তের নির্দেশ দেন এবং জানান, বারকে বরখাস্ত করা আইনগত বৈধতা পাওয়ার আগ পর্যন্ত সম্ভব নয়।
এছাড়া, ইসরায়েলের ‘মুভমেন্ট ফর কোয়ালিটি গভর্নমেন্ট’ এনজিও নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জ দাখিল করেছে। বিরোধী দল ইয়েশ আতিদ-এর নেতা ইয়ার লাপিদ বরখাস্তকে “প্রধানমন্ত্রীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট একটি সিদ্ধান্ত” বলে আখ্যা দিয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় আক্রমণ শুরু করে, যেখানে হামাসের তথ্য অনুযায়ী ৪৮,৫০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
সম্প্রতি ইসরায়েল একটি দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবার গাজায় হামলা শুরু করেছে, প্রথম রাতেই ৪০০ জনের বেশি নিহত হয়েছেবলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এই পরিস্থিতিতে, নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসরায়েলজুড়ে গণবিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে, গাজা যুদ্ধের সমাপ্তি এবং শিন বেত প্রধানের বরখাস্তের প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছে।