পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনায় বসার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান।
ইসলামী বিপ্লবের নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি জানিয়েছেন, ‘গুন্ডামি’ করে বেড়ানো শক্তিগুলোর আলোচনার আহ্বানটি সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে নয়। এটি ইরানের ওপর তাদের প্রত্যাশা চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা। ইরান অবশ্যই তাদের প্রত্যাশা মেনে নেবে না
ট্রাম্প গত শুক্রবার দাবি করেন, তিনি ইরানের নেতৃত্বকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ইরানের পরমাণু অস্ত্রধর হওয়া ঠেকাতে দুটি পথ আছে। একটি হচ্ছে সামরিক পথ, অন্যটি হলো চুক্তি করা।
মার্কিন নেতার এমন মন্তব্যের একদিন পর শনিবার (৮ মার্চ) ঊর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক থেকে খামেনি বলেন, উৎপীড়নকারী শক্তিগুলো কেবল পারমাণবিক ইস্যুতে আলোচনা করতে চায় না। তাদের জন্য আলোচনার মানে নতুন প্রত্যাশা আরোপের একটি পথ, বিশেষ করে ইরানের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক অবস্থান সম্পর্কে।
খামেনি বলেন, তারা জনগণের মনে সন্দেহ তৈরি করার লক্ষ্য রাখছে যে, আলোচনার জন্য তাদের প্রস্তুতি সত্ত্বেও, আমরা কেন আলোচনায় অনিচ্ছুক। তবে তাদের আসল লক্ষ্য আলোচনা নয়, বরং আধিপত্য বিস্তার এবং চাপিয়ে দেওয়া।
২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মেয়াদে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের সঙ্গে হওয়া পারমাণবিক চুক্তি থেকে একতরফাভাবে সরিয়ে নেন। তারপর থেকে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন খাতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর ট্রাম্প প্রথম মেয়াদের ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের ধারা বহাল রেখেছে।
আয়াতুল্লাহ খামেনি চুক্তির অংশীদার ইউরোপীয় পক্ষগুলোরও সমালোচনা করেছেন। এসব ইউরোপীয় দেশ ইরানকে ‘চুক্তির অধীনে প্রতিশ্রুতি পালন না করার’ অভিযোগ তুলেছে।
তবে ইরানের নেতা বলেন, আপনি বলছেন ইরান তার পারমাণবিক প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি। আচ্ছা, আপনি কি আপনার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন?
২০১৮ সালে চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর ইউরোপীয় পক্ষ – ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি তেহরানকে চুক্তির বাধ্যবাধকতা মেনে চলার আহ্বান জানায়। তারা ইরানকে অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ইউরোপীয়রা সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। এর পরও ইরান তার পারমাণবিক চুক্তির প্রতিশ্রুতি পুরো এক বছর বজায় রেখেছিল।