জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিঠা পানির উৎস পর্বতমালা ও হিমবাহ নানা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এগুলো সংরক্ষণ করা জরুরি।
বিশ্বের স্থলভাগের প্রায় ২৪ শতাংশজুড়ে থাকা পর্বতমালা প্রতি বছর বৈশ্বিক মিঠা পানির ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ সরবরাহ করে। এগুলো কৃষি, শিল্প এবং গৃহস্থালির জন্য গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর উৎস।
জাতিসংঘের “পর্বতমালা O হিমবাহ: জলাধারের ভবিষ্যৎ“ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পর্বতমালার বরফ ও হিমবাহ দ্রুত গলছে, যা পানির উৎস সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বিশ্বকে।
বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ সেচযোগ্য জমির পানির উৎস পর্বতমালা। বিংশ শতাব্দীতে অন্তত ১৮০ কোটি মানুষ পার্বত্য জলের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
বিশ্লেষণ অনুযায়ী, বর্তমানে কার্বন নিঃসরণ কমালেও হিমবাহ সংকোচন অব্যাহত থাকবে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা শিল্পবিপ্লব-পূর্ব সময়ের তুলনায় ১.৫ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেলে ২১০০ সালের মধ্যে হিমবাহগুলোর ২৬-৪১ শতাংশ বিলীন হয়ে যেতে পারে।

জাতিসংঘের মতে, ২০০০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বে মিঠা পানির উত্তোলন ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বের প্রতি চারজনের মধ্যে একজন চরম পানি সংকটে ভুগছে, আর চারশ’ কোটি মানুষ বছরে অন্তত কিছু সময় তীব্র পানির ঘাটতির মুখোমুখি হয়।
বিশ্বের ১৫৩টি দেশ আন্তঃসীমান্ত নদী, হ্রদ ও জলাধার ভাগ করে ব্যবহার করছে। তবে মাত্র ৪৩টি দেশে এসব জলাধারের ৯০ শতাংশ কার্যকর ব্যবস্থাপনার আওতায় রয়েছে।
জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, দূষণ, বাঁধ, অতিরিক্ত নিষ্কাশন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী পানির বাস্তুতন্ত্রের অবনতি হচ্ছে। পর্বতমালা ও হিমবাহ রক্ষা করা শুধুমাত্র পরিবেশ রক্ষার বিষয় নয়, বরং এটি বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও মানবজীবনের স্থায়িত্বের জন্য অপরিহার্য। সংকট আরও তীব্র হওয়ার আগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।