ঈদ সামনে রেখে সাধারণত বাংলাদেশি পর্যটকদের ভিড়ে জমজমাট থাকে কলকাতা, শিলিগুড়ি, দার্জিলিং ও আগরতলার বাজার ও শপিং সেন্টারগুলো। তবে এবার সেই চিত্র পাল্টে গেছে। বাংলাদেশ থেকে আসা পর্যটকের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ভারতীয় ভিসা প্রক্রিয়ার কড়াকড়ি, টাকার বিনিময় হার বৃদ্ধি, যাতায়াত ব্যয় বেড়ে যাওয়া এবং অন্যান্য বিধিনিষেধের কারণে বাংলাদেশিরা এবার কম সংখ্যায় ভারতে যাচ্ছেন। এতে হোটেল, রেস্তোরাঁ, পরিবহন এবং শপিং সেন্টারগুলোর ব্যবসায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।
কলকাতার নিউ মার্কেট, গড়িয়াহাট, হাতিবাগান ও বরাবাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশি ক্রেতারা সাধারণত ঈদের আগে প্রচুর কেনাকাটা করেন। কিন্তু এবার তাদের অনুপস্থিতিতে বিক্রি কমে গেছে ৫০-৬০% পর্যন্ত।
এক হোটেল মালিক বলেন, “প্রতিবছর ঈদের এক মাস আগে থেকেই বাংলাদেশি পর্যটকদের কারণে হোটেল ফুল বুক থাকত। এবার বুকিং ৩০-৪০% কম। এটা আমাদের জন্য বড় ধাক্কা।”
পর্যটন শিল্পে বড় ক্ষতি
শুধু বাণিজ্যিক কেন্দ্র নয়, পর্যটন এলাকাগুলোতেও একই অবস্থা। দার্জিলিং, শিলিগুড়ি ও আগরতলায় বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা কম থাকায় হোটেল ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়েছেন। রেস্তোরাঁ ও স্থানীয় ট্যুর অপারেটরদের ব্যবসাও ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
ভারতের পর্যটন ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো বাংলাদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সহজ ভিসা প্রক্রিয়া, স্পেশাল ডিসকাউন্ট এবং যাতায়াত সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছে। তারা মনে করেন, দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য বিশেষ সুবিধা চালু করলে এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, যদি এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে, তাহলে আগামী বছরগুলোতে আরও বড় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। ঈদ বা অন্যান্য উৎসবকেন্দ্রিক বাণিজ্যে বাংলাদেশি পর্যটকদের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।