ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাজ্য সরকার ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য আগামী সপ্তাহে একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করছে। যারা ইসরায়েল ত্যাগ করতে চান, তাদেরকে অনলাইনের মাধ্যমে আগ্রহ নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত তেল আবিব বিমানবন্দরে না যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর (FCDO)।
গত এক সপ্তাহ ধরে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলি প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ইসরায়েল ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চল থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে, যা ইসরায়েল-ইরান সংঘর্ষ আরও জটিল করে তুলেছে।
সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সতর্ক ভ্রমণ পরামর্শ
পররাষ্ট্র দপ্তর (FCDO) জানিয়েছে, ইসরায়েল ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে সব ধরনের ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে ব্রিটিশ নাগরিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ১৩ জুন ইসরায়েল যখন ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে, তখন থেকেই দেশটির আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
কোন নাগরিকেরা এই ফ্লাইটে উঠতে পারবেন?
এই চার্টার্ড ফ্লাইটে ব্রিটিশ নাগরিক এবং তাদের সঙ্গে থাকা নিকটাত্মীয়রা (যারা ব্রিটিশ না হলেও) উঠতে পারবেন। তবে স্থানসংকটের কারণে প্রয়োজন অনুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ দেওয়া হবে।
পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, “এই ফ্লাইট বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্বল অবস্থায় থাকা ব্রিটিশ নাগরিক ও তাদের নির্ভরশীলদের জন্য নির্ধারিত।”
যাত্রীদের অবশ্যই যথাযথ ভ্রমণ নথিপত্র ও ভিসা থাকতে হবে।
বিমান চলাচল সীমিত সময়ের জন্য চালু
ইসরায়েল সরকারের ‘অপারেশন সেফ রিটার্ন’ (Operation Safe Return) উদ্যোগের অংশ হিসেবে রবিবার ছয় ঘণ্টার জন্য দেশটির আকাশসীমা খোলা থাকবে, যাতে আটকে পড়া নাগরিকরা ফিরতে পারেন।
তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ১৪:০০ থেকে ২০:০০ স্থানীয় সময় পর্যন্ত (১০:০০ BST থেকে ১৮:০০ BST) ফ্লাইট ল্যান্ডিংয়ের জন্য খোলা থাকবে।
আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ও অন্যান্য দেশের পদক্ষেপ
যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, পরিস্থিতির অস্থিরতার কারণে ফ্লাইটের পরিকল্পনা হঠাৎ বদলে যেতে পারে। তবে চাহিদা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যতে আরও ফ্লাইট চালানো হতে পারে।
অন্যান্য দেশগুলোও নিজ নিজ নাগরিকদের সরিয়ে নিতে উদ্যোগ নিয়েছে।
- India স্থলপথ ও বিমানপথে নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
- United States সহায়তাপূর্ণ ফ্লাইট শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
- China এরই মধ্যে প্রায় ৪০০ নাগরিককে ইসরায়েল ও ইরান থেকে সরিয়ে নিয়েছে।
- অস্ট্রিয়া জানিয়েছে, তারা ইরান ও ইসরায়েল থেকে প্রায় ১২০ জন, যাদের মধ্যে অন্য দেশের নাগরিকও ছিলেন, তাদের সরিয়ে নিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের অবস্থান
যুক্তরাজ্য বলেছে, তারা ইরানে মার্কিন বিমান হামলায় অংশ না নিলেও এ বিষয়ে আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অবহিত ছিল। ব্রিটিশ মন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস বিবিসিকে বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থেই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।