অস্কারজয়ী প্রামাণ্যচিত্র No Other Land-এর ফিলিস্তিনি সহ-পরিচালক হামদান বলালকে আটক করার পর অবশেষে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। পশ্চিম তীরের মাসাফার ইয়াত্তা অঞ্চলে ইসরায়েলি বসতকারীদের হামলার শিকার হওয়ার পর তাকে আটক করেছিল ইসরায়েলি সেনারা।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) তাকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন তার সহ-পরিচালক ইউভাল আব্রাহাম। এর আগে, আব্রাহাম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে বলেছিলেন যে বলালকে সশস্ত্র মুখোশধারী ইসরায়েলি বসতকারীরা আক্রমণ করে আহত করেছে, পরে ইসরায়েলি সেনারা একটি অ্যাম্বুলেন্স থেকে টেনে নামিয়ে তাকে আটক করে।
What happened?
✔ ইসরায়েলি সেনারা বলেছে, তারা পশ্চিম তীরের সুসিয়া গ্রামে “ইসরায়েলি বসতকারীদের ওপর পাথর নিক্ষেপের” অভিযোগে তিন ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে, যার মধ্যে বলালও ছিলেন।
✔ তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছেন, বলাল কোনো হামলা করেননি, বরং তিনি এবং তার গ্রামবাসীরা বসতকারীদের হামলার শিকার হন.
✔ হামলার পর বলালকে রক্তাক্ত অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার চেষ্টা করলে, সেনারা অ্যাম্বুলেন্সে ঢুকে তাকে আটক করে.
অস্কার জয় এবং সম্ভাব্য প্রতিশোধ
No Other Land প্রামাণ্যচিত্রটি চলতি বছর অস্কারে সেরা প্রামাণ্যচিত্র পুরস্কার জিতেছিল। এই ছবিটি ইসরায়েলি সেনাদের দ্বারা ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ এবং গ্রাম ধ্বংসের করুণ বাস্তবতা তুলে ধরেছে।
সহ-পরিচালক বাসেল আদরা বলেন,
“অস্কার থেকে ফিরে আসার পর প্রতিদিন আমাদের ওপর হামলা হচ্ছে। এটা মনে হচ্ছে যেন আমাদের ছবির জন্য প্রতিশোধ নেওয়া হচ্ছে।”
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও মানবাধিকার লঙ্ঘন
মানবাধিকার সংগঠন Centre for Jewish Nonviolence বলেছে, তারা পুরো হামলার দৃশ্য ভিডিও করেছে এবং ইসরায়েলি সেনারা ফিলিস্তিনিদের উপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে।
ইসরায়েলি আইনজীবী লেয়া তেমেল বলেন,
“আমরা জানতাম না বলালকে কোথায় রাখা হয়েছে, এবং আইনজীবীদেরও তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।”
পশ্চিম তীরের চলমান সংকট
ইসরায়েল ১৯৬৭ সাল থেকে পশ্চিম তীর দখল করে রেখেছে এবং আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থীভাবে সেখানে বসতি স্থাপন করছে।
No Other Land চলচ্চিত্রের কাহিনীও মাসাফার ইয়াত্তা এলাকায় ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের ঘটনা তুলে ধরে, যেখানে ইসরায়েল একটি সামরিক প্রশিক্ষণ এলাকা ঘোষণা করে বহু ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করেছে।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা ও বসতকারীদের দমন-পীড়ন বিশ্ববাসীর সামনে উঠে এসেছে।