বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে নিলামের মাধ্যমে মার্কিন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার অনুষ্ঠিত এ নিলামে প্রতি ডলারের দর নির্ধারিত হয় ১২১ টাকা ৫০ পয়সা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই প্রক্রিয়ায় মোট ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার সংগ্রহ করে। সম্প্রতি দেশের ব্যাংকিং খাতে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। ফলে বাজারে ডলারের দামও কমতির দিকে। এই প্রেক্ষাপটে রপ্তানি খাত ও প্রবাসী আয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষা এবং ডলারের দর একটি নিয়ন্ত্রিত সীমায় রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক এমন উদ্যোগ নেয়।
নিলামে অংশ নেওয়া অধিকাংশ ব্যাংকই প্রতি ডলারের দর প্রস্তাব করেছে ১২০ টাকার আশপাশে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে স্থিতিশীল সংকেত দিতে এ চেয়ে কিছুটা বেশি দামে ডলার কেনে। এতে ব্যাংকগুলো ডলারের প্রতি আস্থা পায় এবং বিনিময় হারেও স্বাভাবিকতা বজায় থাকে। এর আগে ডলার সংকট সামাল দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রি করেছিল। শুধু গত তিন অর্থবছরেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ছাড়ে প্রায় ৩৪ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী হয়েছে। এর ফলে খোলাবাজার ও আন্তঃব্যাংক বাজারে ডলারের দাম কমেছে প্রায় ২ টাকা ৯০ পয়সা। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, বাজারভিত্তিক ডলারের মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপের সমন্বয়ে দেশের মুদ্রা বাজারে ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতা ফিরে আসছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে আমদানি-রপ্তানির ভারসাম্য ও বৈদেশিক বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনবে।