Sylhet – সিলেটের জনপ্রিয় সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে ঘটে যাওয়া এক অপ্রত্যাশিত ঘটনার প্রতিবাদে, পুলিশের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা—সিলেট রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নাছির উদ্দিন আহমেদ—এর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পেছনে মূল ঘটনা হলো, পর্যটকদের ‘বিনা ভাড়ায় নৌকা’ সেবার প্রত্যাশা পূরণ না হলে ঘাটে থাকা ভূমি অফিসের সহায়ককে মারধরের অভিযোগ।
Incident details
শনিবার দুপুরে সাদাপাথরের নৌকাঘাটে, যেসব পর্যটক বিনামূল্যে নৌকার প্রত্যাশায় বেড়াতে এসেছেন, সেখানে এক বিরোধ দেখা দেয়। অভিযোগ অনুযায়ী, অতিরিক্ত ডিআইজি নাছির উদ্দিন আহমেদ, যিনি সম্প্রতি এসপি পদমর্যাদার অফিসার হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন, নৌকার সেবার জন্য ‘ফ্রিতে নৌকা’ দাবি করেছিলেন।
ভূমি অফিসের সহায়ক জাবেদ আহমেদের মতে,
“দুপুরের দিকে ওই পুলিশ কর্মকর্তা নৌকাঘাটে এসে ‘ফ্রিতে নৌকা’ চান। তখন আমি বলি ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা বলতে। এসময় তিনি উত্তেজিত হয়ে আমার গায়ে হাত তোলেন, আমাকে চড়থাপ্পড় মারেন।”
এই ঘটনার প্রতিবাদে, ঘাটের নৌকার মাঝিরা আংশিক প্রতিহত হিসেবে প্রায় আধা ঘণ্টা নৌকা চালানো বন্ধ রাখেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানান যে, পরিস্থিতি তৎক্ষণাৎ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও বিষয়টির সমাধান
ঘটনার পর দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইউএনও (ইউনিয়ন পরিষদ অফিসার) এবং ওসি (অফিসার ইন চার্জ) সহ বেশ কিছু কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁদের তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপে সমস্যা কিছুটা হলেও শামিল করা সম্ভব হয়। পরে প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা এসে দুঃখ প্রকাশ করে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন।
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার জানান,
“ঘটনাটি সকালে ঘটেছে। সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত ছিল। আপনারা তো বিষয়টি জানেন বলে ফোন কেটে দেন।”
তিনি আরও যোগ করেন, পরিস্থিতির দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসার ফলে পরিস্থিতি সাময়িকভাবে প্রশমিত করা সম্ভব হয়েছে।
তদন্ত ও বর্তমান অবস্থা
ঘটনার পর অভিযোগের ভিত্তিতে পরিস্থিতি নিয়ে সম্যক তদন্ত শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে, অতিরিক্ত ডিআইজির সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করার চেষ্টা করা হয়েছে, তবে অভিযোগে বলা হয়েছে, কল করলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এই বিষয়টি আরও তদন্তের অধীনে নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিক পর্যায়ে ইতোমধ্যে দুঃখ প্রকাশের মাধ্যমে ঘটনাটি সাময়িকভাবে সমাধান করা হলেও, উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টির সঠিক তদন্ত ও সংশোধনের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি রয়ে গেছে।
প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী পদক্ষেপ
ঘটনার ফলে, নৌকার মাঝিরা ও স্থানীয় পর্যটকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নৌকার মাঝিরা অবহিত করেছেন যে, মারধরের ঘটনাটি তাদের কাজে বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। তারা আরও বলেছে, “আমরা আধা ঘণ্টা নৌকা চালানো বন্ধ রাখলাম। আমাদের মনে হলো, অন্যায় ঘটলে সবার সম্মুখে প্রতিবাদ করা উচিত।”
সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মন্তব্য ও প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া নিয়ে, বিষয়টি এখন তদন্তাধীন রয়েছে। পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা যথাযথ তদন্ত ও তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদী।
সাদাপাথরের এই ঘটনা পর্যটনকেন্দ্রের পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পর্যটকদের আস্থা ক্ষুণ্ণ হওয়ার পাশাপাশি, স্থানীয় জনগণ ও নৌকার মাঝিরাও এই ধরনের দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছেন। প্রশাসন ও পুলিশ কর্তৃপক্ষ পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।