একসময় সোশ্যাল মিডিয়ার সম্রাট হিসেবে বিবেচিত ফেসবুক এখন আগের সেই প্রভাব আর ধরে রাখতে পারছে না—এমনটাই মনে করছেন মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ । প্ল্যাটফর্মটির ক্রমহ্রাসমান সাংস্কৃতিক প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে তিনি এতটাই উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন যে, ২০২২ সালে এক অদ্ভুত ও চমকপ্রদ প্রস্তাব দিয়েছিলেন—সব ব্যবহারকারীর বন্ধুতালিকা একবারে মুছে ফেলার!
এই বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) এক মামলার সাক্ষ্যদান পর্বে। মামলায় মেটার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয় যে, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিযোগিতা দমিয়ে দিয়েছে এবং একচেটিয়া আধিপত্য গড়ে তুলেছে।
আদালতে উপস্থাপিত এক ইমেইল থেকে জানা যায়, ফেসবুকের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ায় জাকারবার্গ এমন একটি র্যাডিক্যাল আইডিয়ার কথা বলেন—প্রতি বছর বন্ধুতালিকা রিসেট করার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের মধ্যে নতুন সংযোগ তৈরির আগ্রহ জাগানো যেতে পারে। এমনকি তিনি প্রস্তাব করেছিলেন, ছোট কোনো দেশে পরীক্ষামূলকভাবে এই ধারণা চালু করা যেতে পারে, যাতে বড় ক্ষতির আশঙ্কা কম থাকে। পাশাপাশি, তিনি জানতে চেয়েছিলেন ফলো-ভিত্তিক মডেলে রূপান্তর কতটা কার্যকর হতে পারে।
তবে শেষ পর্যন্ত এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়নি। আদালতে জবানবন্দি দিতে গিয়ে জাকারবার্গ বলেন, মেটার ৩.৩ বিলিয়ন ব্যবহারকারীর বড় একটি অংশ এখনো মেটায় আছে মূলত উপযুক্ত বিকল্পের অভাবে।
বর্তমানে, আগের সেই ঘনিষ্ঠ বন্ধন ও ব্যবহারকারীদের মধ্যকার আন্তরিক যোগাযোগ ফিরিয়ে আনতে মেটা নতুন পথ ধরেছে। পুরোনো দিনের সেই ‘বন্ধুবান্ধব-কেন্দ্রিক’ অভিজ্ঞতা ফিরিয়ে আনতে তারা চালু করেছে একটি বিশেষ বন্ধুবান্ধব ট্যাব, যেখানে অ্যালগরিদমভিত্তিক কনটেন্ট দেখানো হয় না।
২০২৫ সালকে সামনে রেখে মেটার লক্ষ্য—ফেসবুককে আবার সেই ব্যক্তিগত, ঘনিষ্ঠ, বন্ধুত্বের প্ল্যাটফর্মে রূপান্তর করা, যেখানে মানুষ নিজের কাছের মানুষদের সঙ্গেই যুক্ত থাকতে চায়।