হযরত মাওলানা মুহম্মদ আবুল বাশার;
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। অফুরন্ত দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি।
মুহররম ও আশুরার মর্যাদা
১। পবিত্র মুহররম মাসটি ইসলামের চারটি সম্মানিত মাসের একটি।
২। এ মাসটি বিশেষ ফজিলতপূর্ণ এবং সম্মানিত।
৩। এই মাসের দশ তারিখকে বলা হয় পবিত্র আশুরা শরীফ.
৪। এক রেওয়ায়েত অনুযায়ী, উম্মতে মুহাম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক যেই দশটি বুযূর্গ দিন উপহার দিয়েছেন, তার দশম ও সর্বশেষ দিনটি হচ্ছে আশুরা শরীফ।
৫। অন্য বর্ণনায় বলা হয়, এ দিনে দশজন নবীর প্রতি মহান আল্লাহ পাক দশটি বিশেষ রহমত বর্ষণ করেছিলেন, তাই এর নাম হয়েছে “আশুরা”।
৬। এ দিনেই বহু গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টি ও ঐতিহাসিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
৭। সৃষ্টির সূচনা যেমন এই দিনে হয়েছিল, তেমনই কিয়ামতের সমাপ্তি ও হবে এই দিনে।
আশুরা শরীফে সংঘটিত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাসমূহ
৮। এই দিনে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মর্যাদা, খাছিয়ত ও “হাবীবুল্লাহ” উপাধি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন।
৯। হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার তাওবা কবুল করা হয় এবং উনাকে ইছমত দান করা হয়।
১০। হযরত ইদরীস আলাইহিস সালাম উনাকে আসমানে উত্তোলন করা হয়।
১১। হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার কিশতী মুবারক জুদি পাহাড়ে স্থিত হয়।
১২। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার জন্ম এবং অগ্নিকুণ্ড থেকে রক্ষা পাওয়ার ঘটনা ঘটে।
১৩। হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম উনার দোয়া কবুল ও মর্যাদা বৃদ্ধির ঘোষণা হয়, এবং উনার পুত্র হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম বিশ্ব শাসনের ঘোষণাপত্র লাভ করেন।
১৪। হযরত আইয়ূব আলাইহিস সালাম এই দিনে রোগমুক্তি লাভ করেন।
১৫। হযরত মূসা আলাইহিস সালাম উনার উপর তাওরাত নাযিল হয়, এবং এই দিনেই উনি বনী ইসরাইলসহ লোহিত সাগর পার হয়ে ফিরআউনকে ধ্বংস করেন।
১৬। হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম মাছের পেট থেকে মুক্তি পান।
১৭। হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম আসমানে উঠিয়ে নেওয়া হয়।
১৮। এই দিনেই দুনিয়ার প্রথম বৃষ্টি হয়, প্রথম রহমত নাযিল হয়, এবং হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম প্রথম যমীনে অবতরণ করেন।
আশুরা: রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের দিন
এ সকল ঘটনার কারণে আশুরা শরীফ দিনটি এক পবিত্র, মহিমান্বিত ও বরকতময় দিন। এটি মাগফিরাত, রহমত, সাকীনা ও ফজিলত হাসিলের এক অনন্য সুযোগ। তাই এই দিনে রোজা রাখা, দোয়া করা, গরিব-অসহায়কে দান করা ও আমল করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
আমরা যেন যামানার ইমাম, মুজতাহিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম সুলতানুন নাছীর মুর্শিদ কিবলা আলাইহিস সালাম উনার উসিলায় আশুরা শরীফের আমল করে যাবতীয় ফজিলত ও রহমত হাসিল করতে পারি—এই দোয়া করি।