কমল কৃষ্ণ দে, মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার কাজী পাড়া গ্রামের নুর মোহাম্মদ রাব্বি এখন একজন সফল খামারি হিসেবে পরিচিত। মৎস্যচাষ, গরু ও হাঁস পালন, কলা ও আমবাগান থেকে শুরু করে শাকসবজি চাষ—বহুমুখী খামারি কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে তিনি গড়েছেন নিজের সফলতা।
নুর মোহাম্মদ রাব্বির মৎস্যঘেরে দেশি ও কার্প জাতীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ হচ্ছে। বর্তমানে তিনি প্রায় ১৪০টি হাঁস পালন করছেন। তার খামারে রয়েছে নয়টি গাভী। পাশাপাশি কলা ও আমগাছ রয়েছে যার ফলন থেকে তিনি নিয়মিত আয় করেন। এ ছাড়া শাকসবজির ক্ষেত থেকেও উপার্জন করছেন তিনি।
স্বপ্ন ও সংগ্রামের গল্প
রাব্বি জানান, তার এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম ও বহু প্রতিবন্ধকতা অতিক্রমের গল্প। ছোটবেলা থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। পড়ালেখার পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও ধানের ব্যবসা শুরু করেন। একবার রসুনের ব্যবসায় বড় ধরনের লোকসান হয়। পুঁজির অভাবে ব্যবসা বন্ধ করতে হয়।
২০১৬ সালে এইচএসসি পাস করার পর মাটিরাঙ্গা সরকারি কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হন। এরপর ২০২২ সালে উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসের মাধ্যমে খাগড়াছড়ি যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গবাদি পশু পালন ও প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ক প্রশিক্ষণ নেন। তারপর থেকেই শুরু হয় তার খামারি জীবন।
প্রথমে মাটিরাঙ্গার হাতিয়াপাড়া গ্রামে একটি ছোট পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন এবং ভালো লাভ পান। এরপর ব্র্যাক থেকে ঋণ নিয়ে বড় পরিসরে খামারি কার্যক্রম শুরু করেন। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি ধারাবাহিকভাবে সফলভাবে চাষাবাদ করে আসছেন।
সামাজিক স্বীকৃতি
প্রতিবেশীরা জানান, নুর মোহাম্মদ রাব্বি একজন উদ্যমী ও পরিশ্রমী খামারি। তার উদ্যোগ শুধু তাকে স্বাবলম্বী করেনি, বরং এলাকার অন্য যুবকদেরও অনুপ্রাণিত করছে।
নুর মোহাম্মদ রাব্বির মতো উদ্যোক্তারা দেশের কৃষি ও খামারি খাতের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তার সাফল্যের গল্প নতুন প্রজন্মের জন্য হতে পারে এক অনন্য দৃষ্টান্ত।