সৌদি আরবে ২০৩৪ বিশ্বকাপের জন্য নির্মাণাধীন একটি স্টেডিয়ামে কাজ করার সময় এক পাকিস্তানি অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
What happened? মুহাম্মদ আরশাদ নামের এই পাকিস্তানি শ্রমিক ১২ মার্চ সৌদি আরবের আল-খোবার শহরে নির্মাণাধীন অ্যারামকো স্টেডিয়ামের উপর থেকে পড়ে মারা যান।
সূত্র বলছে, তিনি উচ্চতা থেকে কাজ করার সময় ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান। তার সঙ্গে আরও দুজন কর্মী ছিলেন, তবে তারা নিরাপত্তামূলক দড়িতে সংযুক্ত ছিলেন, কিন্তু আরশাদ ছিলেন না।
প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য
বেলজিয়ান নির্মাণ কোম্পানি বেসিক্স গ্রুপ, যারা এই স্টেডিয়ামের প্রধান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একটি, তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে—
“দুর্ভাগ্যজনকভাবে, মুহাম্মদ আরশাদ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছি এবং তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”
পরিবারের কষ্ট
মুহাম্মদ আরশাদের লাশ মঙ্গলবার পাকিস্তানে পাঠানো হয়। তার বাবা মুহাম্মদ বশির Said,
“আমরা যেন আকাশ থেকে মাটিতে পড়ে গেছি। পুরো পরিবার শোকে ভেঙে পড়েছে। আরশাদের রোজগারেই তার তিন সন্তানের জীবিকা চলত। এখন আমরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।”
কঠোর বাস্তবতা
বিশ্বকাপের জন্য নির্মাণাধীন সৌদি স্টেডিয়ামগুলোতে হাজারো অভিবাসী শ্রমিক চরম প্রতিকূল অবস্থায় কাজ করছেন।
✔️ অমানবিক আবাসন ব্যবস্থা
✔️ অত্যন্ত কম মজুরি
✔️ দীর্ঘ সময় কাজ করার পরও বেতন বিলম্বিত হওয়া
✔️ অত্যন্ত গরমের মধ্যে দৈনিক ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্বেগ
বিশ্বকাপ আয়োজনের ঘোষণার পর থেকেই অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সতর্ক করেছিল যে,
“বিশ্বকাপ নির্মাণস্থলগুলোতে অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর ব্যাপক শোষণ চলবে এবং অনেকেই প্রাণ হারাবেন।”
নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন
সৌদি সরকার এবং নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে,
“নিরাপত্তা ও শ্রমিকদের কল্যাণ আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
কিন্তু অভিবাসী শ্রমিকদের বর্ণনা ভিন্ন।
স্টেডিয়াম নির্মাণ ছাড়াও পরিবহন ও হোটেল অবকাঠামো নির্মাণেও ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসী শ্রমিক নিযুক্ত করা হয়েছে।
সৌদি আরব ২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের পুনরায় ব্র্যান্ডিং করতে চায়। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে,
“এই আয়োজনের পেছনে অভিবাসী শ্রমিকদের রক্ত, ঘাম ও ত্যাগ রয়েছে।”
In light of this incident FIFA এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি.